রংপুর প্রতিনিধি : জমিজমার বিরোধকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরের বিরামপুর থানার ওসির কথামত কাজ না করায় ওসি একপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে এবং নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে অপরপক্ষকে পরিবারসহ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের অব্যাহত হুমকির মুখে ওই পরিবারের সদস্যরা সোমবার দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরে ওই ওসির বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুবিচার চেয়েছেন।

দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার একইর গ্রামের বাসিন্দা ও ওসির হুমকির স্বীকার হাসুন চৌধুরী সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তেব্যে জানান, একই এলাকার মকছেদুর রহমান চৌধুরী ও আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরীর সাথে তার প্রায় সাড়ে ৮ একর জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তা সত্বেও তিনি ওই জমি তার দখলে রেখে সেখানে চাষাবাদ করে আসছেন।

এ বিষয়ে হাইকোটে একটি মামলাও বিচারাধীন রয়েছে। হাসুন চৌধুরী অভিযোগ করেন, ওসি মনিরুজ্জান তার প্রতিপক্ষ মকছেদুর রহমান চৌধুরীর বাড়িতে ভাড়া থাকার কারণে মকছেদের কথামত এলাকায় যা খুশি তাই করায় গোটা এলাকাবাসী তার উপর ক্ষুব্ধ। গত আগস্ট মাসে হাসুন চৌধুরী তার জমিতে তার লোকজন দিয়ে ধানের চারা লাগাতে গেলে মকছেদের লোকজন বাধা দেয় এবং তাদের লোকজনকে নাজেহাল করে উল্টো তার লোক দিয়ে থানায় তিনি ও তার ছেলেসহ ৯জনের নামে দাঙ্গা হাঙ্গামার একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে ছেলে এনায়েতকে আটক করে জেল হাজতে পাঠায়।

এরপর গত ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাকে মুঠোফোনে থানায় ডেকে নেন এবং হাইকোর্টে থাকা মামলাটি তুলে নিয়ে মকছেদের সাথে মিমাংসার জন্য চাপ দেন। নইলে পরবর্তীতে মাদকদ্রব্য কেনা বেচার মামলা দিয়ে জেলা খাটাবেন বলে হুমকি দেন। শুধু তাই নয়, একই দিন রাতে হাসুন চৌধুরীর অনুপস্থিতিতে পুলিশের একটি দল পিকআপ ভ্যান নিয়ে তার বাসায় যায় সেখানে বাড়ির মালামাল তছনছ করে এবং মহিলাদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে।

জমির মামলাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন থাকার পরের ওসি মামলাটি তুলে নিতে বলছেন। মামলা তুলে না নেওয়ায় গত ৯ নভেম্বর ওসির নির্দেশে থানার একদল পুলিশ বিনা কারণে তার বাড়িতে গিয়ে ঘরের মালামাল তছনছ করে এবং পরিবারের সদস্যদের মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।

দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পুলিশ সদর দপ্তর এবং রংপুরের ডিআইজি বরাবার লিখিত আবেদন পাঠালে মকছেদ আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এবং তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোর কারণে বাধ্য হয়ে তিনি রংপুর এসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তিনি ওসির ওই রোষানল থেকে রক্ষা পেতে ডিআইজি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।

এ ব্যাপারে বিরামপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ওসি (তদন্ত) মতিয়ার রহমান জানান, ওসি স্যার চিকিৎসার জন্য ছুটি নিয়ে ঢাকায় আছেন। তার ব্যক্তিগত নম্বর চাইলে তিনি তা দিতে অপরাগত প্রকাশ করে বলেন, আমি নতুন এসেছি, এত কিছ জানি না।

(এম/এসপি/নভেম্বর ১৮, ২০১৯)