ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম ঈশ্বরদীর জয়নগর মোকামে চালের পাইকারি ও খুচরা দাম বেড়েই চলেছে। মোকামে দর বৃদ্ধির ফলে খুচরা বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ৪ থেকে ৬ টাকা। বিগত ১০ দিন যাবত হঠাৎ চালের দর ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে পড়েছে ভোক্তা-সাধারণ। চাল বাজারের ঊর্ধ্বগতির এ লাগাম এখনই টেনে ধরতে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। 

এদিকে ধানের অভাবে ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়েছে শত শত চালকল ও চাতাল। জয়নগর মোকামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চালের দাম বাড়ার আগেই এই মোকারে প্রায় ৭ শতাধিক হাস্কিং চালকল ও চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার জয়নগর এলকায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পর্যাপ্ত ধানের অভাবে এবং বেশী দামে ধান কিনে ভাঙ্গিয়ে চাল বাজারজাত করে অব্যাহতভাবে লোকসান গুণতে হয়েছে। এছাড়া অটো রাইস মিলের দাপটে কোনটাসা হয়ে পড়েছেন হাস্কিং মিলের মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এসব সমস্যার কারণেই ঈশ্বরদীর সহস্রাধিক চালকল ও চাতালের বেশীরভাগই বন্ধ হয়ে গেছে।

চালকল মালিক গ্রুপ ও মিল মালিক সমিতির হিসেব অনুযায়ী ঈশ্বরদীর জয়নগর, মিরকামারি, বরইচারা, সাহাপুর, দাশুড়িয়া, মুলাডুলিসহ মোকামে বর্তমানে ৫০টির মতো চালু আছে। বাকীগুলো বন্ধ। এসব মিল ও চাতালে কর্মরত প্রায় ১২ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা ধান-চাউল মালিক গ্রুপের সভাপতি ফজলুর রহমান মালিথা জানান, এলাকায় একের পর এক অটো রাইস মিল চালু হওয়ায় হাস্কিং মিল মালিকরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন।

জয়নগের ব্যবসায়ী আলহাজ্ব খায়রুল ইসলাম জানান, ধান-চালের বৃহত্তম এই মোকামে পাইকারি বাজারে বাঁশমতি ৫০ কেজির বস্তা ২,১০০ টাকা হতে বেড়ে ২,৪০০ টাকা, মিনিকেট ১,৯০০ থেকে ২,২৫০ টাকা, আটাশ ১,৬০০ হতে ১৮০০ টাকা, উনত্রিশ ১,৩০০ হতে ১,৬০০ টাকা এবং মোটা চালের দাম ১,২০০ টাকা হতে বেড়ে ১,৪০০ টাকা হয়েছে।

চালের বাজার দরের হঠাৎ ঊর্ধ্বগতির পেছনে মোকাম ও মিল মালিকদের কারসাজি রয়েছে বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।

চালকল মালিকরা জানান, ৩১ অক্টোবর সরকারিভাবে আমন মৌসুমে ধানের দাম কেজি প্রতি ২৬ টাকা ধার্য করায় বাজারে ধানের দাম বেড়েছে। মণ প্রতি ধানের দাম ২৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে ধানের দাম যে হারে বেড়েছে, চালের দাম সে তুলনায় খুব বেশি বাড়েনি বলে চালকল মালিকরা দাবি করেছেন।

(এসকেকে/এসপি/নভেম্বর ১৯, ২০১৯)