নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়িতে আগুন ও অস্ত্র লুট মামলায়  জামায়াত সমর্থক ৮ নারী কর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। সোমবার ওই ৮ নারী কর্মী নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট-৩ নং আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করে। আদালতেরে বিচারক নাদিরা সুলতানা শুনানী শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

আদালত সুত্রে জানা যায়, পুলিশের ওপর হামলা ,গাড়িতে আগুন ও অস্ত্র লুট (জি.আর. ৪৬/১৩) মামলার আসামী রাশিদা বেগম (৩২), জোছনা বেগম (২৮), খুরশিদা পারভিন (৪২), শিউলি খাতুন (২৬), রেখা খাতুন (২৫), বুলু বেগম (৩৪), ডলি আক্তার (৪২) ও শেফালী খাতুন (২০) সোমবার দুপুরে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল খালেক আসামিদের নির্দোষ দাবি করে আসামীদের কেউ কেউ গর্ভবতী ও অসুস্থ’ বলে আদালতকে অবহিত করেন। আইনজীবী বলেন, তাদের জামিন দিলে তারা নিখোঁজ বা হারাবে না। এসময় বাদী পক্ষ থেকে আইনজীবী এমরান আলী জামিনের বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালতের বিচারক নাদিরা সুলতানা জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে সকলকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর পরপরই তাঁদের আদালত থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
লালপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী আবুল কালাম আজাদ জানান, মামলায় তাদের অনেক নেতা কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। ওই ৮ নারীর দলীয় কোন পরিচয় নাই। তারা জামায়াতের সদস্য নয়।
উল্লেখ্য, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুন্যাল ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়ে মামলার রায় ঘোষণার পর পরই নাটোরের লালপুর উপজেলার কদমচিলান গ্রামে জামায়াত সমর্থকরা কর্তব্যরত টহল পুলিশের ওপর হামলা, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র লুট, কদমচিলান ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। এসময় তারা পুলিশকে মারপিট করে তিনটি রাইফেল ও একটি শর্টগান ও আটশ’ রাউন্ড গুলি লুট করে। এ ঘটনায় পরদিন লালপুর থানায় ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২ হাজার ৭৪৫জনের নামে লালপুর থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এই দু’টি মামলার মধ্যে লালপুর থানার ওয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আব্দুর রউফ বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় একটি এবং নিহত যুবলীগ নেতার ভাই শাহিনুর রহমান বাদী হয়ে অপর মামলাটি দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে ইতিমধ্যে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর সোমবার ওই আট নারী আসামী আদালতে হাজির হয়। নাটোরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট-৩ এর জিআরও আব্দুল বারেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
(এমআর/এএস/আগস্ট ০৪, ২০১৪)