আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার অনুমোদিত চলমান ৩০টি ইট ভাটায় কমপক্ষে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করেছেন ইট ভাটা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দরা। বিভিন্ন ইট ভাটা থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী এই ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা হয়েছে।

সে মোতাবেক ৩০টি ইট ভাটায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে জোয়ারের পানি এবং অতিবৃষ্টির কারণে গড়ে প্রায় সাত লাখ ইট সম্পূর্ণরূপে মাটির সাথে মিশে গেছে। আর এমন হিসেবে ৩০টি ভাটায় দুই কোটি ১০ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। এতে কমপক্ষে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার সকালে ইট ভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মৃধা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এমনই একসময় আঘাত হেনেছে যখন সকল ইট ভাটায় ইট পোড়ানো অথবা প্রস্তুতের কাজ চলছিল। শুধু পানিতে ইট নষ্ট হয়ে যাওয়াই শেষ হিসেব নয়, প্রথম আবহাওয়ার সংকেত পেয়ে সকল ইট ভাটায় লাখ লাখ টাকার পলিথিন ক্রয় করে তৈরীকৃত কাঁচা ইট যথানিয়মে ঢেকে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু উপর থেকে ঢেকে দিলেও জোয়ারের পানিতে নিচের ইট ভিজে সাজানো সকল ইট হেলে পরেছে, আর এতে তৈরী এবং চুল্লিতে যতো ইট ছিলো সব গলে মাটির সাথে মিশে গেছে।

রানা ও যমুনা ব্রিকসের প্রোপাইটর রেজভী হাসান রানা জানান, তার দুটি ভাটায় তৈরী অন্তত ১০লাখ কাঁচা ইট সম্পূর্ণ মাটির সাথে মিশে গেছে। এতে কমপক্ষে ২০ লাখ টাকার বেশী আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। যে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।

সাজ ব্রিকসের প্রোপাইটর সাইফুল ইসলাম জানান, তার ভাটায় কিলিং এবং ফরাশ মিলিয়ে কমপক্ষে ১৫ লাখ ইট ছিলো, যা সম্পূর্ণ মাটির সাথে মিশে গেছে। এতে তার প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। একই কথা জানালেন হাসান, সুপার, সকাল, আকন, ইসলাম, মাষ্টার, বেষ্ট, সালাম, আলী, হাওলাদার, ফাতেমা, আরাবী, বিএলএস, আসিব, নাইস সহ অন্যান্য ইট ভাটার মালিকরা।

ইট ভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, চলতি বছর প্রতিটি ইট ভাটায় ইট পিছু তিনগুন খরচ হচ্ছে। প্রথমত তৈরী খরচ এবং দ্বিতীয় নষ্ট ইট অপসারণ মজুরী এবং সেই ইট পুনঃরায় তৈরী করা। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়, কারণ প্রতিটি ইট ভাটার রয়েছে মোটা অংকের ঋণ। দাদন ছাড়া কোটি কোটি টাকা নগদ ব্যয় করে ভাটা চালানো সম্ভন নয়, বিধায় সকল ভাটার বিপরীতে দাদন অথবা ঋণ নেয়া আছে। ফলে চলতি বছর সকল ইট ভাটার মালিককে লোকসান গুনতে হবে।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ২২, ২০১৯)