সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের মাসকা গ্রামে (মধ্যপাড়া) বিদ্যুৎ দেয়ার কথা বলে ৮৫টি পরিবারের কাছ থেকে ২ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা লিটন মিয়া। 

তিনি টাকা নেয়ার দায় স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদার মেসার্স মোশাররফ হোসেনকে ৮০/৯০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। তবে তিনি বলেন ওই টাকা বিদ্যুৎ সংযোগের কথা বলে নেয়া হয়নি। ওই টাকা ওয়ারিং করতে যা খরচ হয় সেজন্য নেয়া হয়েছে।

টাকা না দিলে পল্লী বিদ্যুতের লাইনও নির্মান হবেনা, সংযোগও দেয়া হবে না। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা লিটন মিয়া গ্রামের বি.এন.পির রিপন ও সঞ্জু মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে এ কাজটি করেছেন। বেশ কয়েক মাস আগে টাকা দেয়ার পর যথা সময়ে পুরোপুরি কাজ না হওয়ায় সাধারন কৃষকরা ক্ষোভে দুঃখে ফুঁসে উঠছেন।

গ্রামবাসীর পক্ষে ওই গ্রামের বাসিন্দা সুমি আক্তার গত ১৪ নভেম্বর নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে তিনি বলেন ওই গ্রামে বিদ্যুতের যে লটটির কাজ শুরু হয়েছিল তার লট নাম্বার ৪০২৮। মেসার্স মোশারফ হোসেন ঠিকাদারের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামীলীগের লিটন ও বি.এন.পির রিপন ও সঞ্জু মিয়া বিদ্যুতের লাইন নির্মান সংযোগ ও মিটার স্থাপনের কথা বলে প্রতি পরিবারের কাছ থেকে ৫ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেয়। সুমি জানান, ৮৫টি পরিবারের বিদ্যুৎ সংযোগ ও মিটার দেয়ার কথা বলে, ২ লক্ষাধিক টাকা নিয়েও তারা কাজটি শুরু করে থেমেযান।

এ ব্যাপারে বি.এন.পির রিপন ও সঞ্জু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, আমরা কোন টাকা পয়সা নেই নি। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা লিটন মিয়া এসব কাজ শেষ করার জন্য টাকা নিয়েছেন। আওয়ামীলীগ নেতা লিটন মিয়া অকপটে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নেত্রকোনার ঠিকাদার মোশাররফ হোসেনকে লাইন নির্মান, সংযোগ ও ওয়ারিং করার জন্য ইতিমধ্যে ৮০/৯০ হাজার টাকার মতো দেয়া হয়েছে।

ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হারেছ মিয়া ও টাকা নেয়ার অভিযোগ তুলে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন ও সংযোগের জন্য কাউকে ১ টাকা না দেয়ার জন্য ঘোষনা দিলেও মাসকা গ্রামের ৮৫টি পরিবারের কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়ে যায় লিটন, সঞ্জু ও রিপন। আমার দাবী ওই টাকা কৃষকদেরকে ফেরত দিতেহবে।

ঠিকাদার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে টাকা দেয়ার বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাইন নির্মান সংযোগ ও মিটারের জন্য কোন টাকা পয়সা আমাকে দেয়া হয়নি। ৮৫টি পরিবারে মিটার স্থাপনের লক্ষ্যে ওয়ারিংয়ের মালামাল ক্রয়ের জন্য দোকানদারকে টাকা দেয়া হয়েছে।

নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কেন্দুয়া অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, সুমি আক্তার নামে এক নারী নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বরারব একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জেনারেল ম্যানেজারের নির্দেশে আমরা অভিযোগটির তদন্ত শুরু করেছি। টাকা নেয়ার কথা শুনেছি তবে কিজন্য নেয়া হয়েছে তা তদন্তে বেড়িয়ে আসবে।

(এসবি/এসপি/নভেম্বর ২২, ২০১৯)