মানিক সরকার মানিক, রংপুর : গণতন্ত্র এবং শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি নবীণ ও প্রবীণদের সমন্বয়ে এবং ক্লিন ইমেজ সম্পন্ন নেতাদের নিয়ে আগামি দিনের জন্য দল গঠণের আহবানও জানান তিনি।

ত্যাগী ও কোনঠাসা হয়ে থাকা নেতাদের মূল্যায়ন করার আহবান জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, সুসময়ের কিংবা বসন্তের কোকিলদের দলে স্থান দেবেন না।

আলোচনার মাধ্যমে যে কমিটি গঠন করা হবে তা নেতাকর্মীদের মেনে নেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, নইলে বিষয়টি আমরা আমাদেও নেত্রীকে জানাতে বাধ্য হবো। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের জন্য দলে নতুন এবং বিষুদ্ধ রক্ত ঢোকাতে হবে। কোন দুষিত রক্ত যেন দলে ঢুকতে না পারে সেজন্য নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার পাশাপাশি প্রবীণদের মূল্যায়ন করার আহবান জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রংপুর ও জেলা ও মহানগর কমিটির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জাতীয় ও দলীয় পতাকা এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি মন্ডলির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। বেলা সাড়ে ১১টায় সভা শুরুর অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন, আশপাশের জেলা কমিটির নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে রংপুরের ঐতিহাসিক বিশাল পাবলিক লাইব্রেরির মাঠ।

কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ৭৫ এ একটি কুচক্রি মহল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার মাধ্যমে দেশকে আওয়ামী লীগ শূণ্য করতে চেয়েছিল। কিন্তু ওই কুচক্রি মহলের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। মহান আল্লাহ’র অশেষ রহমতে শেখ হাসিনাকেই তিনি আবার জাতির পিতা রূপে পাঠিয়েছেন। শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের সেরা কয়েকজন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন। কিন্তু তাকে নিয়েও চলছে একের পর এক ষড়যন্ত্র। একাধিকবার তাকে হত্যা চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু ওই কুচক্রি মহল সফল হতে পারেনি এবং আপনারা সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনদিনও তাদের সে স্বপ্ন পুরণ হবে না।

তিনি বলেন, যতদিন পাখির কলতন নদীর গর্জন, আর কৃষকের লাঙ্গল থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর নাম পৃথিবীতে থাকবে। তার নাম মুছে ফেলার সাধ্য কারো নাই।

তিনি বলেন, সময়ের পরিবর্তনে আমরা অনেককেই হারিয়েছি। শত ঝড়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুর মিছিলেও আমরা এখন জনগনকে সাথে পাই। জনগনই আমাদের শক্তি। তিনি বলেন, এক সময় এই রংপুর অন্ধকারে ঢাকা ছিল। মঙ্গা ও দুর্ভিক্ষ ছিল নিত্যসাথী। শেখ হাসিনার সরকার সেই মঙ্গা আর দুর্ভিক্ষকে এখন যাদুঘরে পাঠিয়েছে।

তিনি বলেন, সড়ক পথের ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, টাঙ্গাইল পর্যন্ত ফোর লেনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন বগুড়া থেকে রংপুর, রংপুর থেকে বুড়িমারী,আর বুড়িমারী থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত আমরা ফোর লেন মহাসড়কের কাজে হাত দিয়েছি। উত্তরাঞ্চলে কোন বেকারত্ব থাকবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, প্রত্যেকটা গ্রামকে শহওে রূপান্তর করা হবে এটি শেখ হাসিনার অঙ্গিকার।

তিনি বলেন, আমরা অন্ধকারের বৃত্তে অসম সাহসের কান্ডারি। শেখ হাসিনা রংপুরের পুত্রবধূ। তার নেতৃত্বে এবং তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে স্বপ্ন তা এই রংপুরসহ সাড়া দেশেই বাস্তবায়ন হবেই।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান এম.পি, রংপুর বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি.এম মোজাম্মেল হক, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ও বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সি এমপি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মি আহমেদ, বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ আসনের এম,পি আবুল কালাম আহসানুল হক ডিউক চৌধুরী, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রেজাউল করীম রাজু, মহানগর সভাপতি সাফিউর রহমান সফি কাউন্সিল।

(এমএস/এসপি/নভেম্বর ২৬, ২০১৯)