রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রেখে ঠাকুরগাওঁয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টায় রাণীশংকৈল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলন শুরু হয়ে সন্ধা পর্যন্ত দুইটি অধিবেশনে চলে সম্মেলনের অনুষ্ঠান।

এতে ১ম অধিবেশনে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যাপক সইদুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি বিশেষ অতিথির বক্তৃতা রাখেন জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি সাবেক সংরক্ষিত সাংসদ সেলিনা জাহান লিটা প্রধান বক্তার বক্তৃতা করেন জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাদেক কুরাইশি।

সাংগঠনিক রির্পোট উপস্থাপন করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন। এবং উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সইদুল হক উপজেলা আ’লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করে। সাংগঠনিক নিয়মে রাণীশংকৈল আ’লীগের দায়িত্ব জেলা সাধারণ সম্পাদকের উপর অর্পণ করেন।

দ্বিতীয় অধিবেশনে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীদের নাম নেই জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন অধ্যাপক সইদুল হক। এবং সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেন। এরা হলেন উপজেলা আ’লীগের সাবেক সম্পাদক আব্দুল কাদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাজউদ্দীন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পৌর মেয়র আলমগীর সরকার আ’লীগ নেতা মামুনুর রশিদ এলবাট। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীদের মধ্যে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিচ্ছেলেন ৩৫৭জন কাউন্সিলর।

এদিকে আগামী ৭ডিসেম্বর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যেই শুধু মাত্র উপজেলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের জন্য দুই বার জাতীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসাবে পুরস্কার প্রাপ্ত রাণীশংকৈল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে পড়াশোনার ভোগান্তিতে পড়ে প্রায় সাড়ে ছয়শতাধিক শিক্ষার্থী।

ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন মুঠোফোনে বলেন, আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে পরীক্ষার খাতা মূল্যয়ন করা হচ্ছে। শিক্ষক নেই তাই বিদ্যালয় বিশেষ ছুটি দেওয়া হয়েছে। কতদিন ধরে খাতা মুল্যয়ন করা হচ্ছে প্রশ্ন করলে উত্তরে বলেন তিনদিন থেকে তাহলে বাকি দিন বিদ্যালয় বন্ধ রাখেননি কেন? উত্তরে বলেন, দেখেন রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানগুলো এখানে বিগত সময় ধরে হয়ে আসছে। আমরা চাইলেও এগুলো অনুষ্ঠানের অনুমতি না দিয়ে পারি না। তাই বাধ্য হয়ে বিশেষ ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকসেদুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, প্রধান শিক্ষকের নিকট সংরক্ষিত ছুটি দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বিশেষ কারণ দেখিয়ে বিদ্যালয় ছুটি দেখিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন।

এদিকে বিদ্যালয় বন্ধ রেখে আ’লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার পর এ প্রতিবেদকে ফোন করে হুমকি মুলক কথা বলেন উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সইদুল হক।

তিনি বলেন, তুমি কেন ফোন দিয়েছিলা মডেলের প্রধান শিক্ষককে । এখন বিদ্যালয়গুলোতে কোন পরীক্ষা নেই। তারপরও সাংবাদিকদের একটা নীতিমালা আছে সব বিষয়ে ইন্টারফেয়ার করা যাবে না।

এ প্রতিবেদক সভাপতিকে রগান্বিত ভাষায় কথা বলছেন বললে তিনি বলেন, সম্মেলন তাই সবার সাথে ঠান্ডা ম্যাজাজে কথা বলছি সম্মেলনের আগে হলে অন্য ভাষায় কথা বলতাম বলে সংবাদটি করতে বারণ করেন।

(কেএস/এসপি/নভেম্বর ৩০, ২০১৯)