রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিকের সন্ত্রাসী বাহিনীর দু’ সদস্য বন্দুকযুদ্ধে নিহত ও কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে আরো অনেকে। ঘাপটি মেরে থাকা ওইসব সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

সাতক্ষীরা সিটি কলেজ ও সরকারি কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ছয়টি নাশকতার মামলার আসামী ছাত্রশিবিরের সক্রিয় কর্মী আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহনিয়া গ্রামের ইব্রাহীম হোসেনের ছেলে নাহিদ হোসেন বাবুল। বর্তমানে সে সিটি কলেজে পড়াশুনা করলেও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিকের হাত ধরে ভোল পাল্টে ছাত্রলীগে যোগদান করে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের জিয়া হলের বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে থাকে।

সাদিককে খুশী করতে তারই অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয় কয়েক বার। গ্রামে বাবুল নামে পরিচিত হলেও শহরে সে নাহিদ নামে পরিচিত। ২০১৩ সালে তালতলায় সাঈদী মুক্তিমঞ্চে বাবুল এলাকার অশিক্ষিত মানুষদের সংগঠিত করে সরকার বিরোধী স্লোগান অব্যহত রাখে।

কুড়িকাহনিয়া গ্রামের শফিউদ্দিনের ছেলে মাদক ব্যবসায়ি আমিনুর রহমান জানান, সাদিককে একবার মোটর সাইকেলে করে তার কাছে নিয়ে আসেনাহিদ হোসেন বাবুল। পিস্তল দেখিয়ে প্রথম বার তার কাছ থেকে আদায় করে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। পরবর্তীতে সাদিকের কথা বলে কয়েক দফায় ছয় লাখ টাকা আদায় করে বাবুল। বেশি বাড়াবাড়ি করলে ফল ভাল হবে না বলে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়। একইভাবে এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়িদের কাছ থেকে সাদিকের কথা বলে চাঁদার টাকা আদায় করেছে বাবুল।

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, কোন দাগী আসামীকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য সাদিক তার সহযোগী বন্দুকযুদ্ধে নিহত দীপ ও সাইফুলের সঙ্গে থানায় ঢুকে পুলিশকে হুমকি দিতো নাহিদ হোসেন বাবুল। (ভিডিও আছে)। এ ছাড়া সাদিকের দেওয়া অস্ত্র নিয়ে জিয়া হলে সে শিক্ষার্থীদের হুমকি দিতো। বাবুলের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে ও পরবর্তী সময়ে আশাশুনি থানার ৫৭/১৩ ও এসটিসি ২৮০/১৫ নং মামলাসহ নয়টি নাশকতার মামলা হয়।

সম্প্রতি বাবুলের বিরুদ্ধে পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর তাকে সদর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠায়। জেল থেকে বেরিয়ে সে আবারো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। কয়েকমাস আগে শহরের ঝুটিতলা এলাকায় সাদেক বাহিনী এক বিধবা মহিলার বাড়ি দখল করতে গেলে নিশানা ভুল হওয়ায় নিজেদের ছোঁড়া গুলিতেই পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময়ও নাাহিদ হোসেন বাবুল সশস্ত্র মহড়া দেয়।

যদিও বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নিরীহ কয়েকজন কলেজ ছাত্রকে জামায়াত শিবির বানিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করানো হয়। বন্দুকযুদ্ধে দীপ ও সাইফুল মারা যাওয়ার পর আশিকুর, মেহেদী হাসান, শামীম এহসান,সোহান ওরফে সাম্মি ও আসাদুর রহমান বাবু গ্রেপ্তার হওয়ার পর ঘাপটি মারে বাবুল। তাকে গ্রেপ্তার করলে সাদিক বাহিনীর নেট ওয়ার্ক সম্পর্কে আরো বিস্তর তথ্য জানা যাবে।

(আরকে/এসপি/ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯)