মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর শহরের পাঠককান্দি এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদে আবার ফাটল শুরু হয়েছে। নতুন করে প্রায় ৩‘শ মিটার জায়গা জুড়ে বিশাল ফাটল ধরায় হুমকির মুখে পড়েছে নদের পাড়ের বহু ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা। বুধবার রাতে ডেবে গেছে আরো এক/দেড় ফুট। ফলে সহায় সম্বল হারানোর আশঙ্কায় আতঙ্কে এলাকাবাসী।

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। জরুরী বরাদ্দ না থাকায় ভাঙণরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছেন না তারা। এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ ভাঙণ প্রতিরোধে জরুরীভাবে ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো মুহূর্তে তাদের বসতবাড়ি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্থ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া আড়িয়াল খাঁ নদের হাইক্কার মার ঘাট এলাকা থেকে পাঠককান্দি হয়ে এ.আর হাওলাদার জুট মিলের পশ্চিম গেট পর্যন্ত প্রায় এক কিমি. জায়গা জুড়ে বিরাট ফাটল দেখা দেয়। ফাটলের কারণে ১০/১২ দিন আগে হঠাৎ করে পাঠককান্দি এলাকার বহু বসতবাড়িসহ গাছপালা ও বিভিন্ন স্থাপনা ধসে নদীতে চলে যায়।

এছাড়াও ক্রমাগতভাবে ডেবে যাচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ বাড়িঘর। কোনো কোনো বাড়ি ৮ থেকে ১০ ফুট, কোনো বাড়ি ৪/৫ ফুট ডেবে গেছে। ১০/১২ দিন আগে ফাটল দেখা দিলে জরুরীভাবে ভাঙণরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ২‘শ মিটার এলাকায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করে।

তবে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বরাদ্দ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ আরো ৩‘শ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং সম্ভব হচ্ছে না।

এরই মধ্যে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন আলী ঘরামী বাড়ি, চুন্নু গৌড়া, মুরাদ হাওলাদার এবং ধ্বসে গেছে খানকা শরীফ।

ভাঙণের মুখে সোনামিয়া মোল্লার বাড়ি, আবুল কালাম হাওলাদার, আলমগীর তালুকদার, মোশারফ হোসেন, সাজেদুলের বাড়ি। ভাঙণ কবলিত বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ারারা সম্পদ ও শিশু সন্তানদের নিরাপত্তায় রাত জেগে পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, “জরুরীভাবে ভাঙণ প্রতিরোধে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ২‘শ মিটার এলাকায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ করছি। বরাদ্দ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ আরো ৩‘শ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং সম্ভব হচ্ছে না। অসময়ে নদী ভাঙণের রিপোর্ট পাঠালে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করতে চায় না। নতুন করে ফাটল এলাকানা সরেজমিন ঘুরে দেখেছি, আমি আজই জরুরীভাবে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেবো। বরাদ্দ পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করা হবে।”

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক, মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, “দ্রুত সময়ের মধ্যে নদে ভাঙ্গণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলেছি। প্রয়োজনে আবার বলবো। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সবকিছু দেখে এসেছেন।”

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯)