মাদারীপুর প্রতিনিধি : মইনুল ইসলাম নামের এক চিকিৎসককে হাসপাতালে না পেয়ে ফিরে গেছেন বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২ টার দিকে বেশ কয়কজন রোগী। পরে ওই সময়েই বেসরকারী একটি ডায়াগস্টিক থেকে তাকে বের হতে দেখা গেছে। অভিযোগ রয়েছে তিনি প্রায়ই দিন অফিস সময়ে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে গিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে থাকেন।

বিষয়টির সত্যতা জানতে মইনুল ইসলাম নামের ওই চিকিৎসকের মোবাইলে ফোন দিলে একটি ক্লিনিকের কর্মচারী নারী কন্ঠের এক মহিলা জানান, 'স্যার আল্ট্রা করতেছেন। ব্যস্ত আছেন। পরে ফোন দেন।'

দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিটে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রুমে বসে আছেন ওই চিকিৎসক। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি 'হাসপাতালের কাজেই এসেছি' বলে প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যায়। পরে এক ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির মোটরসাইকেলে করে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার ত্যাগ করেন। মাইনুল ইসলাম শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার এবং বুধবার জরুরী বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন।

জানা যায়, মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১৯ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত একটি আধুনিক উপজেলা মাদারীপুরের এই শিবচর। শিবচরের একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির অব কাঠামোগত উন্নয়ন হলেও চিকিৎসা সেবার উন্নয়ন ঘটেনি এখন পর্যন্তও। দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ রোগীরা হাসপাতালে এসে ঠিকমত পাচ্ছেন না চিকিৎসা সেবা। ঘুরে-ফিরে যেতে হচ্ছে বেসরকারী ক্লিনিকেই। এমন অভিযোগ সাধারন রোগীদের। সরেজমিনে এর সত্যতাও মিলেছে।

উমেদপুর এলাকার মহাসিন মোল্লা জানান, আমি এর আগে দুই দিন আসছি তাকে অফিসে পাই নাই” কেউ কিছু বলতেও পারে না। আজকেও সাড়ে ১১টার দিকে এসে তাকে অফিসে পাই নাই তাই প্রাইভেট হাসপাতালে যাচ্ছি। আমরা গরিবরা কিভাবে চিকিৎসা পাবো।

মাতবর চর এলাকার নসিমন বলেন আমি আমার ছোট মেয়ে রত্নাকে নিয়ে হাসপাতালে আসছি কিন্ত ১ ঘন্টা যাবত বসে আছি তাকে পাচ্ছি না। শুনছি সে নাকি রোগী দেখে আসবে।

এ বিষয়ে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পকিল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এমএ মোকাদ্দেস হোসেন শাহীন বলেন, অফিসের সময়ে বাহিরের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অবস্থান করা এটা একটি ধৃষ্টতামূলক কাজ। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, অফিসের সময়ে কেউ অফিসের কোন আদেশ ছাড়া বাহিরের কোন ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখতে পারেন না। যদি কারো বিরুদ্ধে এমন কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন, ডা.মো:শফিকুল ইসলাম জানান, আমি সংবাদটি শুনেছি আপনাদের কাছ থেকে আমি প্রশাসনিক ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

(এমএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৯)