উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে আজ ৭ই ডিসেম্বর সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শত শত মানুষ গণস্বাক্ষর করেছে। সকাল ১০.৩০ মিনিটে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন ও সাধারণ নাগরিক সমাজ এর উদ্যোগে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু হয়েছে। 

বেলা ২টা পর্যন্ত দেখা যায় ১,৭৩৫ জন সাধারণ মানুষ বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে শতস্ফূর্তভাবে স্বাক্ষর করেন। ঢাকা বিভিন্ন স্থানে এই স্বাক্ষর সংগ্রহ চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

বিদ্যুৎ ও জনস্বার্থ নিয়ে দীর্ঘদিনের আন্দোলনরত রাজনীতিবিদ রুহিন হোসেন প্রিন্স এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বলেন, দুর্নীতি ও ভূল নীতিতে নিমজ্জিত বিদ্যুৎ খাতকে কোরামিন দিয়ে বাচাঁতে সরকার জনগণের পকেট কাটার পথ বেছে নেয়। এটা অনৈতিক, অন্যায়। তিনি বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতি বন্ধ, অব্যবস্থাপনা ও অপচয় বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।

সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জনস্বার্থ রক্ষায় আমরা এই কর্মসূচি করছি। গণশুনানীতে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে এসেছি। আমরা গণশুনানীতে দেখতে পেরেছি বিদ্যুৎ সঞ্চালন, বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো লাভে রয়েছে। তাদের কোন ঘাটতিও নেই। শুধুমাত্র পিডিবির কতিপয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়ার জন্য ঘাটতি ৮ হাজার ৬ শত কোটি টাকা ঘাটতি পূরণের দায় জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া অনৈতিক। তাই এই গণবিরোধী প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে গণস্বাক্ষর করে আমরা কমিশনকে জানাতে চাই। গণস্বাক্ষরের সময় মানুষের মতামত নানামত প্রতিদলিত হয়।

সরকারি চাকুরীজীবী একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, সৎ আয় দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি, হেঁটে চলি। দ্রব্যমূল্যের দাম এমনিতেই আকাশ ছোয়া। এরপর বিদ্যুতের দাম বাড়লে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করতে হবে।

বেসরকারী ব্যাংকে চাকুরীরত মোঃ আলী রনি বলেন, আমি ভাড়া বাসায় থাকি। বাড়িওয়ালা জানুয়ারি থেকে ভাড়া বাড়ানোর নোটিশ দিয়ে বলেছে বিদ্যুতের দাম বাড়লে ভাড়া আরও বাড়বে। এই যদি হয় তাহলে ঢাকা ছাড়তে হবে আমাদের।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বাংলাদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ইয়ারুল বলেন, সরকার তো জনগণের কথা শোনে না। শোনে দুর্নীতিবাজদের কথা। তাদের স্বার্থ রক্ষা করে। এ সময় একজন পথচারী বলেন, স্বাক্ষর করে কিছুই হবে না।

মনোয়ার বেগম নামে এক নারী স্বাক্ষর করে বলেন, সরকার ইচ্ছে করে পেয়াজের দাম কমাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সিন্ডিকেটও ভাঙ্গে না। বিদ্যুতেও মনে হয় সিন্ডিকেট আছে তাই দাম বাড়ছে। অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ তাজ মোঃ স্বাক্ষরের সময় নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, লুটেরাদের সাথে পারা কঠিন। এদের বিরুদ্ধে সচেতন ও সৎ মানুষের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, সদস্য জোয়ারদার, মোস্তফা, রাজ্জাক, গ্রীণ পার্টির চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ খানসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যাক্তিবর্গ।

(পিআর/এসপি/ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯)