নিউজ ডেস্ক : আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ভোটের লড়াই হোক কিংবা মাঠের লড়াই হোক। বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে সেই লড়াই হবে চূড়ান্ত লড়াই। ওই লড়াইয়ে জিতবে আওয়ামী লীগ। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে এ মন্তব্য করেন তিনি।

নগরীর বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। চূড়ান্ত লড়াইয়ে জিতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিন্ন করারও ঘোষণা দেন নাসিম।

এ লড়াইয়ের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এখন সুখের সময় নয়। আমাদের লড়াই শেষ হয়নি। বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিরা বিষধর সাপ। সুযোগ পেলেই তারা আমাদের ছোবল দেবে। তাদের বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।

সম্মেলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্মেলন হচ্ছে, কেউ থাকবেন, কেউ চলে যাবেন। ফারুক চৌধুরী ও আসাদ আওয়ামী লীগকে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাদের নেতৃত্বেই রাজশাহীর সবকটি আসনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করেছে। কিন্তু আগামীতে কঠিন নির্বাচন হবে। ফাঁকা মাঠে গোল দেয়া যাবে না।

বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে খল নায়ক আখ্যা দিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জিয়াউর রহমান খন্দকার মোস্তাকের সঙ্গে চক্রান্ত করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন। তিনি জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকেও হত্যা করেছেন। এসময় কমিশন গঠন করে জিয়াউর রহমানের বিচার দাবি করেন তিনি।

বিএনপিকে ভুলে ভরা দল আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি হচ্ছে ভুলে ভরা দল। আপনাদের জীবনের পাতায় পাতায় ভুল। আপনারা রাজনীতির মাঠ থেকে চলে গেছেন। এখন চক্রান্ত করছেন।

তিনি বলেন, দেশ যতই এগিয়ে যাচ্ছে, ততই চক্রান্ত গভীর হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চক্রান্ত ছিল। এখন চক্রান্ত বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনাকে নিয়ে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ সেই চক্রান্ত গুড়িয়ে দেবে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বেগম জিয়াকে জামিন দেয়ার মালিক আদালত। এখানে আমাদের কোনো এখতিয়ার নেই। কোর্টে গিয়ে জামিন নিন। কিন্তু কোর্টে গিয়ে গুণ্ডামি করবেন না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের বরাত নাসিম বলেন, তিনি (মির্জা ফখরুল) শেখ হাসিনাকে উৎখাত করবে। মনে রাখবেন-‘শকুনের দোয়ায় গরু মরে না’। আপনারা মাঠ থেকে পালিয়ে গেছেন। আমরা মার খেয়েছি, কিন্তু মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যাইনি। আমরাও রেডি আছি। মাঠে থেকে আপনাদের বোমা হামলা-জ্বালাও পোড়াও প্রতিরোধ করবো।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিশেষ অতিথি ছিলেন- দলের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, সদস্য মেরিনা জাহান, নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আব্দুল খালেক ও প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান খান।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সম্মেলনের সমন্বয়ক এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মেরাজ উদ্দীন মোল্লা প্রমুখ।

মধ্যাহ্ন বিরতির পর জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে শুরু হয় সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব। সেখানে ৩৬০ কাউন্সিলর আগামী তিন বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।

২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর জেলার সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলন শেষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে চলে যান কেন্দ্রীয় নেতারা। এর প্রায় এক বছর পর পুরো কমিটি পায় জেলা আওয়ামী লীগ।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯)