স্টাফ রিপোর্টার : চলচ্চিত্র শিল্পে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের সীকৃতিস্বরুপ শিল্পীদের হাতে আজ পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিকেল ৪টায় ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭ ও ২০১৮’ প্রদান করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য সচিব আব্দুল মালেক।

পুরস্কার প্রদান শেষে প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব বিজয়ীকে অভিনন্দন জানান। তথ্যমন্ত্রী ও প্রতিপ্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি তার বক্তব্যে দেশের চলচ্চিত্র তথা শিল্প সংস্কৃতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহ, ভালোবাসা ও অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও গাজী সব মুক্তিযোদ্ধার প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে অনেক কিছু করেছি। আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের সিনেমা দর্শক হারিয়েছে। কীভাবে দর্শককে আবারও হলে ফেরানো যায় সেজন্য অনেক উদ্যোগ হাতে নিয়েছি আমরা।

আমি নিজেও হল মালিকদের সঙ্গে বসেছি। আমার মনে হয় দর্শক ফেরাতে হলে সিনেমাকে ডিজিটালাইজড করতে হবে। বিশেষ করে দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়েও সিনেমা হল ডিজিটাল করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। তাদের জন্য সময় উপযোগী বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিল্পকলার সবগুলো মাধ্যমের ভেতরে সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম চলচ্চিত্র। এর মাধ্যমে মানুষের মনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব। মানুষের মনে গভীর দাগ কাটতে পারে এই চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে মানুষের জন্য। দেশে জঙ্গিবাদ আমরা প্রতিরোধ করছি। শুধু আইনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। চলচ্চিত্র এখানে বিরাট একটা ভূমিকা রাখতে পারে। সেদিকে আপনারা আরো বেশি নজর দেবেন।

প্রত্যেকটা ঘটনা ও কাহিনি যখন তৈরি হবে সেটা যেন জীবনভিত্তিক হয়। দেশের অনেক শিল্পী বাইরে গিয়েও ভালো কাজ করছেন। দেশেও যেন তারা ভালো কাজ করে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায়। আমরা ভারতের প্রখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগালকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছি। এছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে।

একটা সময় এ দেশে বঙ্গবন্ধুর নামও নেয়া যেত না। আজকে জাতির পিতার নাম শুধু দেশে নয়, বিশ্বের দরবারে স্থান করে নিয়েছে। ইউনেস্কো বাংলাদেশের সঙ্গে জাতির পিতার জন্মদিন যৌথভাবে পালন করবে বলেছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। সিনেমার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে দিয়েছেন। এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।

আগামীতে আরও বড় পরিসরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান করা যায় কিনা সে ব্যাপারে ভাবা যেতে পারে। যেমন আমরা যাদের পুরস্কার প্রদান করছি, তাদের কাজের কিছু অংশ তুলে ধরা যেতে পারে এই অনুষ্ঠানে।

ব্যস্ততার অভাবে সিনেমা দেখা হয় না বলে বক্তব্যে জানান প্রধানমন্ত্রী। তবে বিদেশ যাওয়ার সময় বিমানে বসে দেশের সিনেমা দেখেন তিনি। দেশের সিনেমা তাকে মুগ্ধ করে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের নাটককে বিশ্বমানের বলে ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রসঙ্গত, গত ৭ নভেম্বর ২০১৭ ও ২০১৮ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ২৭ ও ২৮ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশি চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য সর্বোচ্চ স্বীকৃতী এই পুরস্কার।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯)