স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে মন্ত্রিসভা পুনর্বিন্যাস হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রিসভা পুনর্বিন্যাসের কথা শোনা যাচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘সেটা এই মুহূর্তে আমি বলতে পারছি না। সেটা তো প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। সম্মেলনের আগে এসব (মন্ত্রিসভা পুনর্বিন্যাস) হচ্ছে না। এই মাসেও সম্ভাবনা কম। নতুন বছরে হবে কিনা সেটা তো প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন। তবে এটা তো রুটিন। ক্যাবিনেট এক্সটেনশন, রিসাফল এগুলো তো হয়ই সব দেশে।’

মন্ত্রিসভায় নন-পারফরমার কিংবা পুউর পারফরমার আছে কিনা- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি একজন মন্ত্রী হয়ে আরেকজন মন্ত্রীকে নন-পারফরমার কেমন করে বলব। এটা কী বলা সম্ভব! জবাবদিহিতা যার কাছে তিনি সেটা মূল্যায়ন করবেন।’

আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘনিয়ে এসেছে আপনাকে আমরা অভিনন্দন জানাব- একজন সাংবাদিক বলতেই কাদের বলেন, ‘আমাকে কেন অভিনন্দন জানাবেন? সম্মেলনটা করার জন্য প্রস্তুতিটা ভালো। আমরা জেলা পর্যায়ে অনেকগুলো সম্মেলনের কাজ শেষ করেছি আরও কয়েকটি রয়েছে। জাতীয় কাউন্সিলের আগে সর্বশেষ সম্মেলন হবে ১৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি জেলায়।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি সভাপতি পদে পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ আমাদের নেত্রী তো বারবার বিদায় নিতে চান তিনি যেতে চাইলেও যেতে নাহি দিব। এটা হচ্ছে আমাদের কাউন্সিলরদের সর্বসম্মত চিন্তা-ভাবনা।’

‘অন্য পদগুলোতে নেত্রী টিম নিজেই সাজান। তিনি যেটা ভালো মনে করেন সেটা করেন। যে কোনো পদেই পরিবর্তন হতে পারে, নেত্রী যদি মনে করেন দলের স্বার্থে পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। এ নিয়ে আমাদের এখানে কোনো অসুস্থ প্রতিযোগিতা নেই নেতৃত্বের। উই আর সলিডলি ইউনাইটেড আন্ডার দ্য লিডারশিপ অব আওয়ার লিডার শেখ হাসিনা।’

অন্যান্য বছর দেখা যায় কেন্দ্রীয় কমিটিতে ১৫-২০ জন বাদ যান, এবার বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা কেমন দেখছেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আসলে মন্ত্রিসভার মতোই। মন্ত্রিসভা তো প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারের বিষয়। এখানের পারফরম্যান্সের বিষয় রয়েছে। যারা নন-পারফরমার কিংবা যাদের পারফরম্যান্স পুউর তাদের তো অহেতুক বড় বড় দায়িত্বে রেখে লাভ নেই। সেই বিচারে যাদের পারফরম্যান্স পুউর তাদের দায়িত্ব পরিবর্তন হতে পারে। তবে এখানে কেউ বাদ যাবে না। দায়িত্বে পরিবর্তন আনা হবে।’

আওয়ামী লীগের নারীর প্রতিনিধিত্ব আরও বাড়ানোর সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

দায়িত্ব পালনে কোনো অপূর্ণতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখুন মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো একটা ট্র্যাকে চলে আসছে। দলেও একটা সিস্টেম গ্রো করেছি। বিভাগীয় দায়িত্বে আমাদের নেতারা রয়েছেন কাজেই কোনো অসুবিধা তো হয়নি। আমি দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকার বাইরেই থাকছি। বিকেলে এসে ফাইল দেখছি। আমার কোনো ফাইল আজকেরটা আগামী দিনের জন্য জমা থাকেনি। তাই এখানে দায়িত্ব পালনে আমি কোনো চাপের মুখে নেই, কোনো অসুবিধা বোধ করছি না। অসুস্থতা হয়ে গেছে, এটার ওপর তো আমার হাত নেই। তবে এখন শারীরিকভাবে যথেষ্ট সুস্থ বোধ করছি।’

নেত্রী চাইলে আবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) যদি আমাকে বলেন তাহলে দায়িত্ব পালনে আমার কোনো অনীহা নেই। তিনি যদি বলেন, নতুন কাউকে আনতে চাই সেটাও স্বাগতম।’

খালেদার জামিন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘বিএনপির কে যে কখন কী বলেন বোঝা বড় কঠিন। তাদের এই মুহূর্তে নেতৃত্বের দুর্বলতাই তাদের অস্তিত্বকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে বলে আমি মনে করি। তাদের নেতৃত্ব সংকটে আছে। নেতৃত্বই অস্তিত্ব ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তাদের দুজন নেতা বিদায় নিয়েছেন, কে যে কখন যায় বলা মুশকিল। তাদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে, টানাপোড়েন চলছে। বেগম জিয়ার আন্দোলন নিয়েও তো তাদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে।’

তিনি বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলন নিয়ে কেউ বলছে আন্দোলনের এখনও সময় হয়নি। তারা আসলে সিদ্ধান্তটা কি নেবে সেটা বলা মুশকিল। তারা এখন সব কিছুতে ব্যর্থ হয়ে আদালতের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তাহলে কি তারা আদালতের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন আমার এটাই প্রশ্ন?

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৯, ২০১৯)