সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের দশম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী গণধর্ষনের শিকার হয়েছে। সান্দিকোনা মডেল বাজার এলাকায় রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে তার কন্যাকে পালাক্রমে ধর্ষণ ও ধর্ষণের কাজে সহযোগিতার অভিযোগে বাঘবেড় গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে আকবর আলী, ফজলুর রহমানের ছেলে জুয়েল ও সল্প মাইজহাটি গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে টিটুর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রোববার রাতে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে রোববারই বাঘবেড় গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে প্রাইভেট শিক্ষক আকবর আলীকে গ্রেফতার করে। সোমবার দুপুরে আকবরকে নেত্রকোনা আদালতে পাঠালে আদালতের বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

এদিকে সোমবার দুপুরে পুলিশী প্রহরায় ধর্ষিতা ছাত্রীকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া ধর্ষিতা ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান মামলার এজাহারের উদৃতি দিয়ে বলেন, শনিবার রাতে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক আকবর আলী ধর্ষিতা ছাত্রীর মায়ের মোবাইল ফোনে রবিবার সকাল সাড়ে ছয়টায় প্রাইভেট পড়তে আসার করা বলেন। শিক্ষকের কথামতো ওই ছাত্রীটি সরল বিশ্বাসে বাইসাইকেল চালিয়ে মডেল বাজার এলাকায় কোচিং সেন্টারে যায়।

কিন্তু সেখানে অন্য কোন ছাত্র-ছাত্রীকে না দেখে তাদের কথা জিজ্ঞেস করলে শিক্ষক আকবর আলী ছাত্রীকে জানান, তুমি ভেতরে বসো, তারাও আসবে। একথা বলার পর আকবর আলী ছাত্রীর বাইসাইকেলটি কোচিং সেন্টারের ভেতর নিয়ে রাখে। পরে ছাত্রীটিকে কম্পিউটার রুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মুখ চাপা দিয়ে ধর্ষণ করে। আকবর ধর্ষণের পর ফজলুর রহমানের ছেলে জুয়েল কৌশলে ঘরে প্রবেশ করলে আকবর আলী ছাত্রীটিকে তার হাতে তুলে দিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলে জুয়েলও তাকে ধর্ষন করে। এসময় আব্দুল হাইয়ের ছেলে টিটু মিয়া বাইরে থেকে ঘরের দরজায় পাহারা দিয়ে ধর্ষণকাজে সহযোগিতা করছিল। পুলিশ আকবর আলীকে গ্রেফতার করলেও ২ জন পলাতক রয়েছে।

সোমবার মেডিকেল পরীক্ষায় যাওয়ার আগে ছাত্রীটি থানা কার্যালয়ে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানায়, আমি এ ধর্ষণের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে আর কোন ছাত্রীকে আমার মতো এ পরিস্থিতির শিকার হতে না হয়।

(এসবি/এসপি/ডিসেম্বর ০৯, ২০১৯)