জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উদ্যোগে আজ ১০ ডিসেম্বর উদযাপিত হয়েছে ‘জামালপুর মুক্ত’ দিবস। এ উপলক্ষে সকাল ১১টায় শহরের দয়াময়ী এলাকায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভা শেষে দুপুর ১টায় শহরের প্রধান সড়কে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা। ১৯৭১ সালের এই দিনে শত্রুমুক্ত হয় জামালপুর।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার সুজায়েত আলী ফকিরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা মুন্সি জহুরুল হক বীর প্রতীক (বার), মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার হোসেন হিরু, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজীব কুমার সরকার, নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমীন, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে এক আনন্দ শোভাযাত্রা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বকুলতলা গিয়ে শেষ হয়।

উল্লেখ্য, পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে জামালপুর মুক্ত হয়েছে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর। জামালপুর ছিল পাক হানাদার বাহিনীর ৩১ বেলুচ রেজিমেন্টের সদর দফতর। এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে জামালপুরকে শত্রুমুক্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা। ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর জামালপুরকে মুক্ত করার লক্ষ্যে চার দিক থেকে জামালপুরকে ঘিরে ফেলে মুক্তিবাহিনী। নিজেদের ঘাঁটি রক্ষায় সর্বশক্তি নিয়োগ করে হানাদার বাহিনীও। সারাদিন ও সারারাত মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর চতুর্মুখী আক্রমণে হানাদার বাহিনী পরাস্ত হয়।

১০ ডিসেম্বর ভোরে মৃত্যুঞ্জয়ী খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক মুন্সীর নেতৃত্বে হাজারো মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী মানুষের 'জয়বাংলা' স্লোগানে প্রকম্পিত হয় জামালপুর জেলা শহর। আকাশে ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। জামালপুর মুক্ত করে বীর বিক্রমে টাঙ্গাইল হয়ে ঢাকা অভিমুখে রওনা হয় মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী। জামালপুর মুক্ত করার যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর ২৩৫ জন সৈন্য নিহত হয় এবং আত্মসমর্পণ করে ৩৭৬ জন হানাদার সৈন্য। এই যুদ্ধে মিত্র বাহিনীর ১১ জন শহীদ হন।

(আরআর/এসপি/ডিসেম্বর ১০, ২০১৯)