বাগেরহাট প্রতিনিধি : হযরত খানজাহানের (রহ:) ৫৬০তম পবিত্র ওফাত দিবসে দুই দিনব্যাপী ওরশ মঙ্গলবার ভোরে ফজরের নামাজের পর আখেরী মোনাজান ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে মাজার শরীফে আসা হাজার-হাজার ভক্ত-আশেকানদের মাঝে ওরশের তাবারক বিতরনের মধ্যে শেষ হয়েছে। সোমবার বাদ-আসর থেকে মাজার শরীফে শুরু হয় ওফাত দিবসের ওরশ অনুষ্ঠান।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারো হযরত খানজাহানের ওফাত দিবসের ওরশ, ধর্মীয় সমাবেশ ও দোয়া মাহফিল যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে মাজার শরীফে জড়ো হন হাজার হাজার ভক্ত-আশেকানরা। এসব ভক্ত-আশেকানদের এখন যার যার গন্তব্যে ফিরছেন।

হযরত খানজাহানের (রহ:) পবিত্র ওফাত দিবসের ওরশ অনুষ্ঠান সুষ্ঠ ও সুশৃঙ্খল ভাবে সম্পন্ন করতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে।
মাজার শরীফের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির জানান, হয়রত শহজালারের (রহ:) সিলেটের পর দেশের দ্বিতীয় আধ্যাত্বিক রাজধানী হচ্ছে হযরত খানজাহানের (রহ:) বাগেরহাট। ইউনেস্কোর ঘোষিত মসজিদের শহরতলীতে চীর নিদ্রায় শায়িত আছেন হযরত খানজাহানের (রহ:)।

তিনি ছিলেন একজন সেনাপতি, সাধক, ধর্ম প্রচারক ও সুশাসক। ঐতিহাসিকদের মতে, প্রায় ৬ শত আগে গৌড়ের সুলতান নাসিরউদ্দিন মাহমুদ শাহের প্রতিনিধি হিসেবে যুদ্ধ করতে-করতে যশোরের বারোবাজার হয়ে বাগেরহাটে এসে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিশাল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এই অঞ্চল জুড়ে ঐতিহাসিক ষাটগুম্বজসহ ৩৬০টি মসজিদ নির্মাণ ও সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে ৩৬০টি দীঘি খনন করেন।

তার মাজার শরীফের গায়ে পাথরে খোদাই করা শিলালিপি অনুযায়ী হযরত খানজাহানের (রহ:) ১৪৫৯ সালের এই দিনে এশার নামাজরত অবস্থায় ৯০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে যেসকল ওলী-আউলিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, হযরত খানজাহানের (রহ:) তাদের মধ্যে অন্যতম। জনসাধারণের কাছে তিনি ছিলেন এক অলৌকিক ক্ষমতাবান মহাপুরুষ।

তাঁর ওফাতের পর প্রতি বছর তার ভক্ত ও অনরাগীরা ওফাত দিবস পালন করে আসছেন। এবছর হযরত খানজাহানের (রহ:) ৫৬০তম পবিত্র ওফাত দিবসে তাঁর মাজার শরীফে দুই দিনব্যাপী ওরশ, ধর্মীয় সমাবেশ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

(এসএকে/এসপি/ডিসেম্বর ১০, ২০১৯)