নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মান্দায় মোবারক হোসেন (৬২) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। লাশ সনাক্ত হওয়ার মাত্র ৫ দিনেই প্রযুক্তির ব্যবহারে রহস্য উদঘাটনসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনকে নওগাঁ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার মুলহোতা পরকীয়া প্রেমিকা আঙ্গুরী খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ঢাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে। স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য তাকে বুধবার নওগাঁ আদালতে পাঠায় পুলিশ। 

নিহত মোবারক হোসেন মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চকসাবাই গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃতরা হলো, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার গুপিনাথপুর এলাকার মৃত মোখলেছার রহমানের মেয়ে আঙ্গুরী খাতুন (৩৫), মোসলেমা বিবি ও জেসমিন আক্তার, স্ত্রী জোসনা বিবি, জামাই ইউসুফ আলী ও আল আমিন।

মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোজাফফর হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আঙ্গুরী বিবি স্বীকার করে যে মুঠোফোনের মাধ্যমে নিহত মোবারক হোসেনের সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৮ নবেম্বর ঢাকা থেকে বাবার বাড়ি মহাদেবপুর উপজেলার গুপিনাথপুর গ্রামে এসে মুঠোফোনে মোবারক হোসেনকে সেখানে ডেকে নেয়। ওইদিন দুপুরে মোবারক সেখানে যায়। এরপর যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খাবার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং মারা যায়। পরে আঙ্গুরী ও তার পরিবারের লোকজন রাতে নিহত মোবারক হোসেনের লাশ আত্রাই নদীতে ফেলে দেয়।

ওসি আরও জানান, গত ৫ ডিসেম্বর লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর নিহতের মেয়ে মান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার দেয়া হয় থানার ওসি (তদন্ত) তারেকুর রহমান সরকারকে। মামলার তদন্ত কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন মান্দা সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মতিয়ার রহমান। প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাত্র ৫দিনেই ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ জড়িত সকল আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চকসাবাই গ্রামের মোবারক হোসেন গত ২৮ নবেম্বর নওগাঁ শহর থেকে নিখোঁজ হন। গত ৪ ডিসেম্বর উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের লক্ষ্মীরামপুর এলাকায় আত্রাই নদী থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে তার লাশ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এ সংক্রান্ত সংবাদ জনকন্ঠসহ বিভিন্ন পত্রিকায় অনলাইনে প্রকাশিত হবার পর পরিবারের সদস্যরা সংগ্রহকৃত আলামত দেখে মোবারক হোসেনের লাশ সনাক্ত করেন। ঘটনায় নিহতের মেয়ে কাজল রেখা বাদি হয়ে মান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।

(বিএম/এসপি/ডিসেম্বর ১১, ২০১৯)