আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আগৈলঝাড়ায় স্কাব ড্রেসের টাকা দিতে না পারায় মঙ্গলবার গনিত পরীক্ষায় ১ ঘন্টা লেখার পরে প্রাথমিক শিশু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়া সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বদলীর শুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিস। 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা প্রিতীশ চন্দ্র বিশ্বাস মঙ্গলবারের ঘটনায় বুধবার তার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। শিক্ষা কর্মকর্তা দাখিল করা প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে প্রেরণ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বুধবার ১৫নং স্মারকে দাখিল করা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাকাল হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃনালিনী তালুকদারের বিরুদ্ধে পূর্বে কয়েকবার স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ বিভিন্ন অনিয়নের অভিযোগ করেন এবং অভিযোগের বিরুদ্ধে তাকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। এতে তার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বরের) ঘটনা খুবই দুঃখ জনক হওয়ায় তাকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্যত্র বদলী করে এলাকায় জনগনের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার শুপারিশ করা হলো।

বদলীর শুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সত্যতা স্বীকার করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম কালুকদার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মৃনালিনী তালুকদারের অন্যত্র বদলীর শুপারিশ করা প্রতিবেদন প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিভাগীয় তদন্তর জন্য তিনিও শুপারিশ করেছেন।

প্রসংগত, উল্লেখিত বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার বিকেলে গনিত পরীক্ষা চলা কালীন সময়ে স্কাব ড্রেসের জন্য বকেয়া ৪শ টাকা করে আদায় করতে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শংকর দে’র মেয়ে পায়েল দে ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শচীন বিশ্বাসের মেয়ে চৈতী বিশ্বাসকে পরীক্ষার হল থেকে অন্য শিক্ষকদের মাধ্যমে লাইব্রেরীতে ডেকে পাঠান প্রধান শিক্ষক মৃনালিনী তালুকদার। শিক্ষার্থীরা তাকে টাকা দিতে না পারায় তাদের পরীক্ষার হল থেকে বাড়ি গিয়ে টাকা আনতে নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষক মৃনালিনী। এক ঘন্টা পরীক্ষা দেয়ার পরে শিক্ষর্থীদের বাড়ি যাওয়ার কারনে আর পরীক্ষার নিয়মিত সময়ে অংশ নিতে পারে নি।

বিষয়টি মুহুর্তের মধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পরলে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা প্রিতীশ বিশ্বাস সেখানে গিয়ে ওই ছাত্রীদের পরীক্ষার হলে অনুপস্থিত দেখতে পান। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক স্কুলে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস।

এসময় তিনি তদন্ত সাপেক্ষ প্রধান শিক্ষকের বিচারে আশ্বাস দিলে ছুটে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শিক্ষা অফিসের বদলীর শুপারীশ ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি শুপারিশ করেছেন।

(টিবি/এসপি/ডিসেম্বর ১১, ২০১৯)