স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কিছু সদস্য দেশজুড়ে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। মিয়ানমারকে আরও সুরক্ষিত, স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী একটি দেশে পরিণত হতে হলে এ ধরনের মানবাধিকার লংঙ্ঘন এবং অব্যাহত দায়মুক্তি অবশ্যই বন্ধ হতে হবে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

মিলার বলেন, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও অর্থ দফতর মঙ্গলবার গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি প্রোগ্রামের অধীনে বার্মার চার শীর্ষ বর্তমান এবং সাবেক সামরিক কর্মকর্তার ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ঘোষণা করেছে। এর ফলে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হওয়া বার্মার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা দুটি ইউনিটসহ ৯-এ উঠল।’

তিনি বলেন, জুলাই মাসে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর আওতায় ওই চার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার ওপর সুনির্দিষ্ট আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হবে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বার্মার চলমান গণতান্ত্রিক উত্তরণের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে গুরুতর অন্যায়ে জড়িতদের জবাবদিহি এবং এসব ঘটনার শিকার মানুষদের জন্য ন্যায়বিচারকে সমর্থন করে।

বার্মার উত্তর রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ অত্যাচারে জড়িত ব্যক্তিদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো অর্থবহ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়নি। এ ঘটনার ফলে সাত লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে উল্লেখ করেন মিলার।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের বিষয়ে আমাদের দূরকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে মৌলিক স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার রক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়। এ বিষয়গুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তাগত স্বার্থের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য এবং এ দেশের মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মনে করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আসিয়ান এবং অন্য ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারদের সঙ্গে আমরা একটি স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে যে অভিন্ন দূরকল্পের ভাগীদার, এ জাতীয় মানবাধিকার লঙ্ঘন তার বাস্তবায়নের সক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

মিলার বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় সদ্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালন করেছে। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি কর্মসূচির অন্তর্নিহিত আমেরিকান আদর্শের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে জবাবদিহি এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্বপালন করা অব্যাহত রাখবে।

মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির ঘটনার উন্মোচন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিকদের প্রশংসা করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ১১, ২০১৯)