গাইবান্ধা প্রতিনিধি : পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই- এ শ্লেগানকে সামনে রেখে পাঠকদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে গাইবান্ধার জেলার সাদুল্যাপুরের“সুলতানা রাজিয়া” নামের পাঠাগার। 

উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ছান্দিয়াপুর বাজারস্থ এ পাঠগারটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্রমান্বয়ে পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠছে বইপ্রেমি মানুষদের।

জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে উপজেলার ছান্দিয়াপুর গ্রামের আজাদ হোসেনের ছেলে বেলাল হোসেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে সুলতানা রাজিয়া নামের পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রাথমিকভাবে ৩০ টি বই নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও, বর্তমানে সাহিত্য, জীবনী, গল্প-কবিতা, চলচ্চিত্র, সাধারণ জ্ঞান, ধর্মীয়সহ অন্যান্য প্রায় ৬ শতাধিক বই রয়েছে সুলতানা রাজিয়া পাঠাগার। আর এইসব বই পড়ে জ্ঞান আহরণ করতে প্রতিদিন আসেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বইপ্রেমি মানুষরা। পাঠকদের উন্নত মানসিকতার সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে পাঠাগারটি।

১৭ নভেম্বর গাইবান্ধা জেলা গণগ্রন্থাগার এর আওতায় সরকারি তালিকাভূক্ত করা হয় পাঠাগারটিকে।

পাঠাগারটির আয়োজনে বিভিন্ন জাতীয় দিবস, সামাজিক সচেতনা বৃদ্ধি, শিক্ষামূলক প্রতিয়োগীতা অনুষ্ঠান,শিক্ষামূলক কুইজ প্রতিয়োগীতা,এলাকার উন্নয়নমূলক কাজসহ একাধিক সামাজিক কাজের স্বচিত্র প্রতিবেদন ‘এক টুকরো স্বপ্ন সুলতানা রাজিয়া পাঠাগার’ কে দেখিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।

(১২ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার সকালে সুলতানা রাজিয়া পাঠাগারে বই পড়তে আসা মুন্নি আকতার নামের এক ছাত্রী জানায়, জ্ঞানের সঞ্চয় করতে পাঠ্যবইয়ের পাশাশি অন্যান্য বই পড়া অত্যান্ত জরুরী মনে করেন। গ্রাম এলাকায় বসবাস করায় দুরের ভালো কোনো পাঠাগার বা গ্রন্থাগারে বই পড়ার সুযোগ হয় না তার। ফলে সুলতানা রাজিয়া পাঠাগারে বই পড়ে জ্ঞান আহরণ করতে আসেন তিনি।

শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সুলতানা রাজিয়া পাঠাগারটি মানুষকে আলোকিত করার যে স্বপ্ন দেখেছেন সেটি সবার আদর্শ হওয়া উচিত। তার স্বপ্নকে টিকিয়ে রাখতে হলে তাকে সবার সহযোগিতা করা দরকার।

পাঠাগারটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বেলাল হোসেন বলেন, পাঠাগার শুরুতে এই স্থানে দাঁড়িয়ে আমি বলেছিলাম রবী ঠাকুরের সেই বিখ্যাত উক্তি ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলরে’। কিন্তু আজ থেকে সেই কথাটি আর বলবো না। পাঠকদের উপস্থিতই বলে দেয় আজকে সুলতানা রাজিয়া পাঠাগারকে কানায় কানায় সুশোভিত করেছেন।সবার সহযোগিতায় সুলতানা রাজিয়া পাঠাগার এগিয়ে যাবে বহুদূর এবং বিভিন্ন অপকর্ম থেকে দূরে থাকবে তরুন সমাজ।

সাদুল্লাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান বিপ্লব জানান, সুলতানা রাজিয়া পাঠাগারটি পরিদশন করা হয়েছে। যুগউপযুগী পথচলার জন্য পাঠাগারের সংশ্লিষ্টকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো.নবীনেওয়াজ বলেন, পাঠাগার এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষ পৃথিবীর বিচিত্র সব জ্ঞানভান্ডারের সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ পায়। নিত্যনতুন উপলব্ধি আর অভিজ্ঞতায় নিজেকে বিকশিত করা যায় পাঠাগারের মাধ্যমেই।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ১২, ২০১৯)