মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : দিন যত গড়াচ্ছে শীতের তীব্রতা তত বাড়ছে। এতে করে কনকনে শীতে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষদের দুর্ভোগের শেষ নেই। পেঁয়াজ, চালসহ নিত্য পন্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারনে নানা সঙ্কটের ঘূর্ণাবর্তে আবদ্ধ শহুরে জীবনে পরিবারের ব্যয় মেটাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হয় সবচেয়ে বেশি নিম্ন আয়ের মানুষদেরই। এদেরই একজন রিনা বেগম (৫০) ।

স্বামী রিকসা চালিয়ে সংসার চালালেও রিনা বেগমের বয়স্ক স্বামীর পক্ষে এই শরীর আর বার্ধ্যক্ষ নিয়ে সংসারের ঘানি টানা সম্ভব না হওয়া পরিবার চালাতে বিকল্প সিদ্ধান্ত মৌলভীবাজার শহরের দরগাহ মহল্লা এলাকার নিম্ন আয়ের এই নারীর। প্রতি শীতকালেই শহরের বেরীরপার পয়েন্টে রাস্তার ফুটপাত ঘীরে ভাপা আর চিতই পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেন তিনি।

নিজ মেয়েকে সাথে নিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চলে তার পিঠা বিক্রির কাজ। সরেজমিন দেখা যায় রাস্তার ফুটপাত দিয়ে হেটে চলা সাধারণ মানুষ গন্তব্যে পৌঁছার জন্য এখানে দাঁড়িয়ে বাস কিংবা সিএনজি অটোরিকসার জন্য অপেক্ষার ফাঁকে কেউ কেউ শখ করে ভাপা আর চিতই পিঠার স্বাধ নিচ্ছেন। এতে করে বাড়ছে রিনা বেগমের পিঠা বিক্রি।

এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি জানান সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চলে তার পিঠা বিক্রি। প্রতিদিন ৬ থেকে ৭শ টাকার মত পিঠা বিক্রি হয়,আর তা থেকে ৩শ টাকার মত লাভ হয়।

তিনি বলেন, প্রতিবছর শীতকাল আসলেই তিনি এখানে পিঠা বিক্রি করতে বসেন। শুধু রিনা বেগম নয়, শীতকাল আসলে শহরের নানা প্রান্থে এভাবেই ফুটপাত ঘীরে গড়ে উঠে নিম্ন আয়ের এসব মানুষদের জমজমাট পিঠা বিক্রি। যদিও ফুটপাতে খোলামেলা পরিবেশে এভাবে পিঠা বিক্রি স্বাস্থ্য সম্মত নয়, তার পরেও ঝুঁকি নিয়ে পিঠা বিক্রি করে রিনা বেগমের মত নারীরা অন্যের দয়ার দিকে না চেয়ে হালাল পন্থায় জীবিকা অর্জনের মধ্যেই স্বার্থক মনে করেন।

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯)