সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা


বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী গণ আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত- ১৫৯, নেত্রকোণা- ৩ আসনের এমপি অসীম কুমার উকিল কে নিয়ে গঠন মূলক সমালোচনা করার অধিকার সকলেরই আছে। কিন্তু তাকে নিয়ে পরিকল্পিত কল্প কাহিনী সাজিয়ে সমালোচনা করা ঘি-এ কাঁটা বাছার মতো। অর্থাৎ ঘি মাখিয়ে একজন ভাত খাচ্ছেন, আর তাকে যদি বলা হয় সাবধানে ভাত খান, গলায় কিন্তু কাটা লাগতে পারে, আমি মনে করি এরকম সমালোচনা করা তার বিরুদ্ধে উঠে পরে লাগার মতো। দোষে গুণেই মানুষ এবং সবকিছু নিয়েই একজন নেতা।

অসীম কুমার উকিল ও একজন মানুষ ও আপোষহীন সংগ্রামী নেতা। দেশ ও দশের সবাই জানেন, নেতা হিসাবে অসীম কুমার উকিলের আপোষহীন কর্মকান্ড ও আদর্শিক বিষয় কেমন? তিনি যখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, সে সময় দেশে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন খুব চাঙ্গা। এই আন্দোলনের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম অগ্রজ ছাত্রনেতা তিনি। সেসময় ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন হাবিবুর রহমান হাবিব।

আন্দোলন সংগ্রাম যখন তীব্রতর হতে লাগল, তখন স্বৈরাচার সরকারের হুমকী ধমকী ও বুলেটে অনেকের প্রাণহানি ঘটতে থাকল। নির্বিচারে শুরু হল গ্রেফতার। জীবনের ভয়ে আদর্শের কাছে নতিস্বীকার করে স্বৈরাচার এরশাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম থেকে সরে দাঁড়ালেন হাবিবুর রহমান হাবিব। কিন্তু সে সময় জীবনের সব মায়া ত্যাগ করে দেশ ও জনগনের স্বার্থে অসীম কুমার উকিল আন্দোলন সংগ্রাম আরও বেগবান করে তুলেন। জীবনের ঝুকি নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার আদর্শকে মাথায় তুলে নিয়ে সামনের দিকে পথ হেটে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছেন।

সুতরাং দেশের শন্তিপ্রিয় জনগণ মনে করেন অসীম কুমার উকিল একজন আদর্শিক, সৎ, কর্মঠ, নিষ্ঠাবান ও সাহসী নেতা। এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসীম কুমার উকিলের সমালোচনার বিষয়টি সবার মুখে মুখে তীব্র প্রতিবাদের ভাষায় ফিরছে। এক কথায় বলতে গেলে অসীম কুমার উকিল আজ আর একটি নাম নয়। একটি আদর্শে পরিনত হয়েছে। তাই তাকে নিয়ে অযথা নোংরা সমালোচনা করা “ঘি মাখা” ভাতে কাটা বাছার মতো।

এছাড়া এমপি প্রসঙ্গে বলতে গেলে তিনি শতভাগ সৎ, কর্মঠ এবং বিনয়ী। আমরা নেত্রকোণা অঞ্চলের মানুষ হিসাবে আরও অনেক এম.পি দেখেছি। তৃণমূল জনগণের মতে কেউ কেউ বক্তৃতার মঞ্চে বলেছেন আমি দেড়শ টাকার বেতনের চাকরি করেছি, আজ অনেক মানুষকে নিজে চাকুরি দিচ্ছি। এম.পি হয়েছি মানুষের কল্যানের কাজ করছি। কিন্তু সাধারণ জনগণ দাবি করে বলেন, যারা বা যিনি মঞ্চে এসব কথা বলেছেন, ফোন করে খুব একটা জনগণ তাকে পেয়েছে কিনা অনেকেই জানেন না।

তাছাড়া মাসে মাসে নির্বাচনি এলাকাতেও আসেন নি। আবার কারও বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের ও অভিযোগ উঠেছিল, তাড়াও নির্বাচনী এলাকায় কমবেশী ভালো কাজ করেছেন। তখন কিন্তু তাদেরকে নিয়ে আজ যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইচ্ছা মতো লিখছেন, অতীতে কিন্তু একটি কথা বলতেও শুনিনি এবং লিখতেও দেখেনি কেউ ১০-১৫ বছরে একটি অক্ষর।

অসীম কুমার উকিলের ঘুম ভাঙে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে। যেখানে পায়ে হেটে অথবা মোটর সাইকেলে চড়ে চলে যান হাসপাতলে রোগীদের খবরা খবর নিতে। সকাল সাড়ে সাতটায় চলে যান নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের হাতে গড়া শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের সার্বিক সমস্যা দেখতে, বিদ্যাপীঠ এম.পি. ভূক্তি ও উন্নয়ন করতে। এরকম সকালে এমপি হওয়ার পর অনেক নজির আছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার।

শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামান তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিদ্যালয়ের পরিদর্শনের পর দিন বলেন, হুমায়ুন আহমেদ স্যার যেমনটি চেয়েছিলেন অর্থাৎ কোন গাড়ির বহর ছাড়া কোন এমপি মন্ত্রী তার বিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন সু-শৃঙ্খল ভাবে, তার মতে এমনটি করেছেন এমপি অসীম কুমার উকিল। এছাড়া বিদ্যালয়টি এম.পি.ও ভূক্তি হওয়ার পর বিজ্ঞান মনষ্ক লেখক ডঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল নভেম্বর মাসে হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে এসে বক্তৃতার মঞ্চে বলেছেন, অসীম উকিল একজন সৎ, কর্মঠ ও আদর্শিক নেতা।

তার কোন তুলনা হয় না। ওই দিন মেহের আফরোজ শাওন বলেছেন, অসীম কুমার উকিলের আদর্শ অনুস্মরণ যোগ্য। প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী বলেছেন অসীম কুমার উকিল শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এমপিও ভূক্তির ব্যাপারে আমাকে কথা দিয়েছিলেন, সারা নেত্রকোণা জেলায় একটি বিদ্যালয় এম.পি.ও ভূক্তি হলে হুমায়ুন আহমেদের শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ হবে। তিনি কথার সঙ্গে সারা জীবন কাজের মিল রেখে চলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার শুরু হলে চার দিক থেকে এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে।

কেন্দুয়া পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আদর্শিক ছাত্রনেতা মোঃ কামরুল হাসান ভূঞা দাবি করে বলেন, যিনি রাজনীতির শুরু থেকে কোন নেতা কর্মী ও সাধারণ জনগণকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন, চাকুরির জন্য ঘুরিয়েছেন বা টাকা নিয়েছেন এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবেন না। কামরুল হাসানের মতো সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে আরও অনেকেই এ দাবি করছেন, কিন্তু আজ যারা সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম অর্থাৎ কেশব রঞ্জন সরকার যেসব বিষয় সমালোচনায় তুলে এনেছেন, তাতে তিনি মানসিক ভাবে সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন বলেই মনে হয়। তিনিতো কোন দিন অতীতের কাউকে নিয়ে সমালোচনা করেছেন এমনটি কেউ শুনেননি বা লিখতেও কেউ দেখেননি। তবে কেন অসীম কুমার উকিল কে নিয়ে সমালোচনা করছেন? তাকি ফরমাইশি কোন লেখা নাকি, “ঘি ভাতে” কাটা কাটা বাছার মতো নয় ?

লেখক : সাংবাদিক, সভাপতি, কেন্দুয়া উপজেলা প্রেসক্লাব, ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দুয়া গণ সাহিত্য পরিষদ।