মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম কুচিয়ামোড়া এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল হক হাওলাদারের বখাটে ছেলে শাকিল হাওলাদার একই এলাকার নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে। পরে সেই ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার পর লজ্জায় ঐ ছাত্রী মাদ্রাসায় যেতে পারছেনা। উল্টো পড়াশুনা তার বন্ধের পথে। 

এদিকে মামলা করায় ঐ বখাটের পরিবার ছাত্রীর পরিবারকে নানা ধরণের হুমকি দিচ্ছে বলে বুধবার দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিক সংগঠন মৈত্রী মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলের মাধ্যমে এই অভিযোগ করেন ঐ ছাত্রীর বাবা। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে সংবাদ সম্মেলন বলেন, মামলা করার ২২দিন পরও বখাটেকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এসময় তিনি ধর্ষককে গ্রেপ্তার ও কঠোর বিচারের দাবী করেন।

ঐ ছাত্রীর বাবা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার মেয়ে যখন ৭ম শ্রেণীতে পড়তো তখন থেকেই বখাটে শাকিল হাওলাদার নানাভাবে বিরক্ত করতো। স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিত। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

পরে ২৬ নভেম্বর আমার মেয়ে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বখাটে শাকিল জের করে ধরে নিয়ে যায়। পথেই ঐ ছেলের নানাবাড়িতে নিয়ে যায়। ফাকা বাড়ি পেয়ে তাকে জোর করে ধর্ষণ করে এবং তা ভিডিও করে। ধর্ষণের ঘটনাটি আমার মেয়ে ভয়ে ও লজ্জায় আমাদের বিষয়টি জানায়নি। পরে ঐ বখাটে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এই ঘটনার পর আমার মেয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছেনা। এমনকি মাদরাসায় যেতে পারছেনা। পড়াশুনা আজ পথের পথে।

নির্যাতিতার বাবা আরও বলেন, মাদারীপুর সদর থানায় গত ২৬ নভেম্বর মামলা করেছি। কিন্তু ২২দিন পার হলেও প্রধান আসামী শাকিলকে এখনো গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। উল্টো বখাটের বাবা নুরুল হক হাওলাদারসহ চাচা রিপন হাওলাদার, চাচা কামাল হাওলাদার, ভগ্নিপতি রফিক চৌকিদার, মা মায়া বেগম আমাকেসহ আমার পরিবারের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি প্রশাসনকে জানানোর পরও এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আমি বখাটে শাকিলের গ্রেপ্তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করছি।

এদিকে অভিযুক্ত বখাটের বাবা নুরুল হক হাওলাদার জানান, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আমি বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু এখনো কোন ছবি বা ভিডিও দেখিনি। আমি চেয়েছিলাম বিষয়টি সমাধান করার। কিন্তু তারা আমাদের এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের কথা না শুনে মামলা করেছে। বিচার যা হয় আদালতেই হবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা প্রধান আসামীকে গ্রেপ্তার করার চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া ছেলের মোবাইল নাম্বার ট্রাকিং করা হচ্ছে। এখন সেই মোবাইল নাম্বার আসামী না চালানোর কারণে তাকে গ্রেপ্তার করতে একটু সময় লাগছে।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯)