স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর : সর্বনিম্ন এবং সবর্চো তাপমাত্রা কাছাকাছি নেমে আশায় গত দু’দিন ধরে রংপুর অঞ্চলে শীত যেন মরণ কামড় দিয়েছে এবার। শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে সর্বস্তরের মানুষ। তবে বিশেষ করে নদীতীরবর্তী মানুষজন, খেটে খাওয়া শ্রমজীবী এবং দরিদ্র শ্রেণির মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে মৌসুমী বায়ুর প্রবাহিত হওয়ায় এ অঞ্চলে ঘণকুয়াশায় সঙ্গে চলছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ।

এদিকে তীব্র শীত থেকে রক্ষা পেতে দরিদ্র মানুষজন খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে গত ৩৬ ঘন্টায় বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিদগ্ধ হয়েছে অন্তত ৮ নারী। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বর্তমানে তারা রংপুর মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিটে ছটফট করছেন। এদের মধ্যে ৩জনের অবস্থা আশংকাজনক হলে তাদেরকে ঢাকায় নিয়ে যাবার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের বার্ণ ইউনিট সূত্র জানিয়েছে, গত দুই বছরে শীতের তীব্রতা থেকে রেহাই পেতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে ৪৮ নারী ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

হিমালয়ের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে তীব্র শীত আর ঘণ কুয়াশায় কাহিল এখানকার জনজীবন। স্থানীয় আবহাওয়া দফতর জানায়, বৃহস্পতিবার রংপুরে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ছিল ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনি¤œ এবং সর্বচ্চো তাপমাত্রা কাছাকাছি নেমে আশায় এর তীব্রতা অনেক বেড়ে বেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে ঘণকুয়াশায় ঢাকা পড়ে যায় পুরো রংপুর অঞ্চল। এ সময় নগরী অনেকটাই মানবশূণ্য হয়ে পড়ে।

বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কাউকেই বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। এ অবস্থা ছিল শুক্রবার বেলা ১০টা পর্যন্ত। যানবাহন চলছে হেড লাইট জ্বালিয়ে। তিনদিন ধরে আকাশে রোদের দেখা নেই। এতেও বিপাকে পড়েছে গৃহিণীরা। তারা কাপড় চোপড় শুকাতে পারছেন না। বৃহস্পতিবার দুপুরে আগুনে দগ্ধ হয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন হালিমা খাতুন (৫৫) নামের পীরগঞ্জের এক মহিলা। তার পা থেকে কোমড় পর্যন্ত পুড়ে যাওয়ায় তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানান চিকিৎসকরা।

আর এ কারণে তাকে দ্রুত ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এদিকে শীত মোকাবেলায় রংপুর বিভাগে আরও ৪৫ হাজার কম্বল বরাদ্দ এসেছে বলে জানিয়েছে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার কর্মকর্তারা। এছাড়া শীত থেকে দরিদ্র মানুষদের শীত নিবারণ করতে মহল্লায় মহল্লায় গড়ে তোলা হয়েছে মানবতার দেয়াল। সেখানে যে যা পারছেন তাদেও অব্যবহৃত গরম কাপড় টাঙ্গিয়ে রেখে যাচ্ছেন এবং দরিদ্র মানুষেরা তা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন। স্থা

নীয় আবহাওয়া দফতর জানান, এই অবস্থা চলবে অন্তত আরো দুদিন।

(এম/এসপি/ডিসেম্বর ২০, ২০১৯)