মাগুরা প্রতিনিধি : খাদ্য বিভাগের চরম দায়িত্ব অবহেলার কারনে মাগুরা শহরের খেটে খাওয়া নিম্নবিত্ত মানুষেরা সরকারের ১৮ টাকা কেজি দরের আটা পাচ্ছেন না। এদিকে জেলা খাদ্য বিভাগ থেকে বরাদ্দ না পাওয়ায় আটা দিতে না পারায় সাধারণ ক্রেতাদের চাপের মুখে ঘর বন্ধ করে রেখেছেন একাধিক ওএমএস ডিলার।

সারাদেশের ন্যায় কয়েক বছর ধরে সরকারের খাদ্য বিভাগ মাগুরায় ওএমএস ডিলারদের মাধ্যমে ১৮ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি করে আসছে। এ জন্য শহরের ৯ টি ওয়ার্ডে ৫ জন ওএমএস ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ্ডিলার প্রতি প্রতিদিন এক হাজার কেজি করে আটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যেখান থেকে একজন ব্যক্তি ১৮ টাকা কেজিতে প্রতিদিন ৫ কেজি করে আটা কিনতে পারবেন। চলতি মাসের আটা বা গম বরাদ্দের জন্য প্রতি মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে স্ব-স্ব জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যলয় থেকে উর্ধ্বত কতৃপক্ষের কাছে চাহিদা পত্র পাঠাতে হয়।

কিন্তু নাম প্রকশে অনিচ্ছুক একাধিক ডিলার ও খাদ্য অফিসের এক কর্মচারী জানান, মাগুরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খুলনায় বসবাস করেন। সেখান থেকে এসে সপ্তাহে দুই-তিন দিন অফিস করেন। যে কারনে সময় মত চাহিদাপত্র না পাঠানোতে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কার্যালয় থেকে কোন বরাদ্দ পত্র আসেনি। যে কারনে চলতি ডিসেম্বর মাসের ৯ তারিখ থেকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যলয় থেকে শহরের ৫ জন ওএসএস ডিলারদের আটা বা গম সরবরাহ বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কারনে প্রতিদিন শত-শত খেটে খাওয়া নিম্মবিত্ত মানুষ কম দামে আটা কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

শহরের বাসিন্দা ননিদতা রানী, মহসিন আলী, অলেয়া বেগম, সাগর কর্মকারসহ একাধিক ব্যাক্তি বলেন, তারা নিম্ম আয়ের মানুষ। সকল পন্যর উচ্চ মল্যের কারনে সংসার চালতে হিমসিম খেতে হয়। যে কারনে সরকারিভাবে দেওয়া ১৮ টাকা কেজি দরের আটা কিনতে পেরে তাদের বেশ সাশ্রয় হয়। কিন্তু কিন্তু গত ৯ তারিখ খেকে মাগুরা সকল ওএমএস ডিলারের ঘরে আটা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকেও কোন ডিলারের দোকানে আটা মিলছে না। যে কারনে তারা বাধ্য হয়ে খোলা বাজার থেকে ২৭-২৮ টাকা কেজি দরে আটা কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেনছন।

ওএমএস ডিলার বলাই কুরি বলছেন, তারা ৯ ডিসেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত খাদ্য বিভাগের সরবরাহকৃত ১৮ টাকা কেজি দরের আটা পাচ্ছেন না। যে কারনে প্রতি দিন শত-শত ক্রেতা আটা না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করে তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, খাদ্য অফিস থেকে তাদের বলা হচ্ছে, ডিজি সাহেব দেশে না থাকায় এ মাসে চাহিদাপত্র স্বাক্ষর করতে দেরি হয়েছে। তবে দুই একদিনে মধ্যে চাহিদাপত্র চলে আসবে। তার জানা মতে. চলতি মাসের আটার জন্য বিগত মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে চাহিদাপত্র পাঠাতে হয়।

আনোয়ার এন্টারপ্রাইজের অপর ডিলার টুটুল হোসেন বলেন, জেলা খদ্য অফিস থেকে সময় মত চাহিদাপত্র না পাঠানোতে বরাদ্দপত্র না আসায় ৯ তারিখ থেকে তারা মাল পাচ্ছেন না। যে কারনে ক্রেতাদের চাপে তিনি দোকান বন্ধ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অনেকে দোকান বন্ধ দেখে বাড়ি পর পর্যন্ত চলে যাচ্ছেন।

তবে জেলা খাদ্য নিয়নন্ত্রক মঈন উল ইসলাম একই সময়ে নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। একবার বলছেন, তিনি সময় মত বরাদ্দ পত্র পাঠিয়েছেন। আবার বলছেন এক তারিখে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছেন। দুই একদিনের মধ্যে বরাদ্দপত্র চলে আসবে। আবার বলছেন, ডিজি বিদেশ সফরে, ডিডি ট্রেনিং এ থাকায় বরাদ্দপত্র স্বাক্ষর হতে দেরি হচ্ছে।

(টিবি/এসপি/ডিসেম্বর ২১, ২০১৯)