ডেস্ক রিপোর্ট : বরেণ্য সাংবাদিক-সাহিত্যিক, দৈনিক সংবাদের সাবেক সিনিয়র সহকারী সম্পাদক সন্তোষ গুপ্তের দশম মৃত্যুবার্ষিকী ৬ আগস্ট বুধবার। ২০০৪ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম সন্তোষ গুপ্ত। তিনি একাধারে নিষ্ঠাবান সাংবাদিক, চিন্তাশীল লেখক এবং অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী অত্যন্ত সংবেদনশীল মানুষ ছিলেন। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় তার পদযাত্রা ছিল অপরিমেয় মেধা ও দক্ষতাপূর্ণ। রাজনৈতিক চেতনায় অভিষিক্ত হয়ে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিলেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার রাজনৈতিক ভাষ্য অনেক রাজনৈতিক নেতার জন্য ছিল এক ধরনের দিকনির্দেশনা।

সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ সন্তোষ গুপ্ত ১৯২৫ সালের ৯ জানুয়ারি ঝালকাঠির রুনসী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাবা-মার একমাত্র সন্তান ছিলেন। ১৯৪১ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাস করে কলকাতা সিটি কলেজে পড়াশোনা করেন। তৎকালীন আইসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৪৪ সালে কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং এআইজি (প্রিজন্স) অফিসে চাকরিতে যোগদান করেন। একই বছর তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন সময়ে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৮ বছর ঢাকা, যশোর ও রাজশাহী জেলে কারাবরণ করেন। দেশ ভাগের সময় অপসন দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ছিলেন। সাপ্তাহিক জয়বাংলা পত্রিকায় কাজ করেন, ন্যাপের মুখপাত্র নতুন বাংলায় কলাম লিখতেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রেও কাজ করেন।

১৯৫৭ সালে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে তিনি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। তার অসাধারণ তীক্ষ্ণ ‘অনিরুদ্ধের কলাম’ বিদগ্ধ পাঠকমহলে সমাদৃত ছিল।

শিল্প-সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে সন্তোষ গুপ্তের অবাধ বিচরণ ছিল। কবিতা, শিল্পকলা, চিত্রকলা, রাজনীতি, সাহিত্য, সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার ১৮টি গ্রন্থ রয়েছে। সম্পাদনা করেছেন বহু গ্রন্থ। তার বেশকিছু লেখা এখনও অগ্রন্থিত রয়েছে। সাংবাদিকতা ও সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য তিনি একুশে পদক, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদক, মাওলানা তর্কবাগীশ পদক, জহুর হোসেন স্মৃতি পদকসহ বহু পুরস্কার, পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন।


(ওএস/এইচআর/আগস্ট ০৬, ২০১৪)