বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : চিকিৎসক শুন্য হয়ে পড়ায় মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। প্রায় একমাস ধরে চিকিৎসক শূন্য হয়ে পড়ায় আড়াই লক্ষাধিক জনগন তাদের প্রকৃত স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন না। লোকবল সংকটের কারনে এক্সরে মেশিনসহ প্রসুতি সেবার কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সবেধন নীলমনি হিসেবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকতা সবকিছু দেখভাল করলেও অফিসিয়াল কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। এ নিয়ে এলাকার জনগনের  মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।

জানা গেছে, আড়াই লক্ষাধিক জন অধ্যূষিত বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মঞ্জুরীকৃত নয়টি চিকিৎসকের পদের মধ্যেই আটটি পদই শুন্য। একমাত্র সবেধন নীলমনি হিসেবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিদিন অফিসিয়াল কাজকর্ম, জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন মাসিক মিটিং ও ট্রেনিং নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র থেকে ডেপুটেশনে আসা দুই চিকিৎসক ও উপসহকারী মেডিকেল কমিউনিটি অফিসারদের (স্যাকমো) দিয়ে জোড়াতালি ভাবে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবা।

মঙ্গলবার সকাল দশটার দিকে বড়লেখা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগী আকলিমা বেগম (৪৫), ইনাম উদ্দিন (৪০), জাহানারা বেগম (৬৫), বারিক উদ্দিন (২৫), সাইমুম আহমদসহ (১০) অনেকে জানান, ডাক্তার না থাকায় তারা প্রকৃত স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন না। এসময় বহিঃবিভাগে উপসহকারী মেডিকেল কমিউনিটি অফিসারদের (স্যাকমো) রোগীদের সেবা দিতে দেখা গেছে। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের ডেপুটেশনে আসা দুই চিকিৎসক অন্তঃবিভাগে ভর্তিকৃত রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। অন্তঃবিভাগে ভর্তিকৃত রোগীসহ প্রত্যহ গড়ে আড়াই শত রোগী দেখাসহ ২৪ঘন্টা জরুরী বিভাগে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয় বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে বিভিন্ন সময়ে রোগীদের সাথে চিকিৎসকদের ছোটখাটো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।

সুত্র জানায়, বছর দুয়েক আগে উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার গরীব গর্ভবর্তী মহিলাদের বিনামূল্যে সিজারিয়ান অপারেশন হলেও বর্তমানে গাইনী ও এ্যানেসথেশিয়ার চিকিৎসক না থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। ল্যাব টেকনেশিয়ান (এক্সরে) না থাকায় তিন বছরেরও অধিক সময় ধরে সচল এক্সরে মেশিন অচল হয়ে থাকায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে ১০জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র তিন জন চিকিৎসক। এর মধ্যে একজন মার্তৃত্বজনিত ছুটিতে রয়েছেন। অপর দুই চিকিৎসককে ডেপুটেশনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলো চিকিৎসক শুন্য হয়ে পড়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে তৃণমুল পর্যায়ের চিকিৎসা সেবা।

বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আজিম উদ্দিন চিকিৎসক শূন্যের সত্যতা স্বীকার করে জানান, সামগ্রিক বিষয়ে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।

(এলএস/এইচআর/আগস্ট ০৬, ২০১৪)