ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে বিএনপি থেকে আ'লীগে আসা সেই বিতর্কিত নেতা  রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে এবার আ'লীগের এক একনিষ্ঠ কর্মীকে রাতের আঁধারে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে।

গুরুতর জখম হয়ে নাইমুল ইসলাম নাইয়ুম (২৪) বর্তমানে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

গতকাল সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত বারোটার দিকে তার কর্মস্থল মমি হাসপাতালের ডিউটি শেষ করে বাড়ী ফেরার পথে উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের কাচকালি নামক এলাকায় অভিযুক্ত রফিকুলের স'মিলের উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে।

নাইমুল ইসলাম নাইয়ুম ঐ উপজেলার ভানোর বাঙ্গাটুলী এলাকার মোঃ সুলতান আলীর ছেলে ও বালিয়াডাঙ্গী মমি হাসপাতালের এক্সরে ট্যেকনিয়াশিয়ান ও রেডিওলোজিস্ট এবং ইউনিয়ন আ'লীগের একজন নিবেদিত কর্মী।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত নাইয়ুম জানান, গতকাল রাতে সে হাসপাতালের ডিউটি শেষ করে বাড়ী ফেরার পথে ভানোর ইউনিয়ন আ'লীগের সেই বিতর্কিত নেতা রফিকুলের স'মিলের ৫০ হাত উত্তরে কাচকালি নামক স্থানে মুখোশধারী ৬-৭ জন তাকে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এসময় রাম দা'য়ের কোপে তার মাথার হেলমেট চুর্ণবিচুর্ণ হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে দা'য়ের কোপ দিলে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।

পরে জ্ঞান ফিরলে তার সহকর্মী সবুর ও হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম মামুনকে বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে এম্বুলেন্স ও পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

নাইয়ুম আরও জানায়, এর আগে ঐ দিন ভানোর ইউনিয়নের চরকা হাই স্কুল মাঠে এমপি মহোদয়ের কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বিতর্কিত নেতা রফিকুল তাকে হুমকি দিয়ে বলে "সবার আগে তোর মাইর হবে-তুই বেড়ে গেছিস"। এছাড়াও সেখানে রফিকুল ও তার সমর্থিত সাহেদ মাহাবুব ও মানিক প্রভাষক রফিকুলের প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মামুনের উপর চড়াও হয়।এক পর্যায়ে মামুনকে সেখান থেকে নিরাপদে সড়িয়ে আনলে রাতের আঁধারে তার নেতৃত্বে আমার উপর হামলা চালানো হয়।

এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানায় নাইয়ুম।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নেতা রফিকুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান জানান, রাতে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, আ'লীগ প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলের শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে সারা দেশের কাউন্সিলে বিএনপি-জামায়াত থেকে যারা আ'লীগে এসেছে তারা যেন কোনভাবেই দলের পদ-পদবী না পায় সে নির্দেশনা দিয়ে তৃণমুল আ'লীগকে ঢেলে সাজাতে বলেন। কিন্তু সে নির্দেশনা উপেক্ষিত হয় বালিয়াডাঙ্গীর ভানোর ইউনিয়নে। সেখানে যে পরিবারের সকল সদস্য বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাঃ সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে ওই ইউনিয়ন আ'লীগের সাঃ সম্পাদক করা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ হয়। কিন্তু সে কমিটি আজও বহাল রয়েছে। তবে কমিটি গঠনের একদিনের মাথায় কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনায় ভেঙ্গে দেওয়া হয় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কমিটি।

জানা যায়, ঐ ইউনিয়নের কমিটি গঠনকালে আ'লীগের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীকে অবমুল্যায়িত করা হয়েছে।

(এফ/এসপি/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯)