মানিক সরকার মানিক, রংপুর : রংপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা সামগ্রি ও বিভিন্ন মালামাল প্রয়োজন ৯ না থাকা সত্বেও প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ব্যবহার অনুপযোগী ও নিম্নমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহের মাধ্যমে সরকারের সাড়ে ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় ডা. সারোয়াত হোসেন চন্দনের জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

ডা. চন্দন উক্ত অর্থ আত্মসাত মামলার একজন অন্যতম আসামী বলে জানিয়েছেন দুদকের কর্মকর্তা। এর আগে একই মামলায় গত ২৬ নভেম্বর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নুর ইসলাম আদালতে জামিনের আবেদন জানালে তার জামিনও না মঞ্জুর করে তাকেও জেল হাজতে পাঠায় আদালত। বর্তমানে তিনিও কারাগারেই রয়েছেন।

বুধবার বিকালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সরোয়াত জাহান চন্দন রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীওে মাধ্যমে তার জামিনের আবেদন জানান। এ সময় শুনানী শেষে বিচারক রাশেদা সুলতানা জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার বাদী দুদকের প্রধান কার্যালয়েরঙ উপ-সহকারী পরিচালক ফেরদৌস রহমান দায়ের করা মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন, রংপুর মেডিক্যাল কলেজে ভারি যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদীর প্রয়োজন না থাকা সত্বেও এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই এসব মালামাল ক্রয় করা হয়। এ জন্য কলেজ অধ্যক্ষ ডা. নুর ইসলাম যথাযথ চাহিদা এবং স্পেকিশন ছাড়াই বিধিবহির্ভূতভাবে কমিটি গঠন এবং দরপত্র আহবান করেন। পরে তারা তাদের পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক এ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানিকে কার্যাদেশ প্রদান করেন।

এরপর ২০১৮ সালের ২১ জুন দরপত্র মূল্যায়ন করে একই তারিখে কার্যাদেশ প্রদান এবং চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। পরে কার্যাদেশ প্রাপ্তির ৫ম দিনে একই সালের ২৭ জুন মালামাল সরবরাহ না করলেও ওদিনই মালামাল সরবরাহের বিল পাশ করেন এবং প্রশাসনিক অনুমোদনসহ ব্যয় মঞ্জুরী প্রাপ্তির আগেই বিল জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করেন।

এভাবে তারা বেঙ্গল সায়েন্টিফিক এ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির মালিক মো: জাহের উদ্দিন সরকারকে ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৮৯ হাজার তিনশত টাকা আত্মসাতে সহায়তা করেন। দুদকের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ও দরপ্রস্তাব দাখিলকারী বেঙ্গল সায়েন্টিফিক এ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী যথাক্রমে আব্দুস সাত্তার সরকার (জাহের উদ্দিন সরকারের পিতা) ও আহসান হাবিব (জাহের উদ্দিনের ছেলে) এবং ইউনিভার্সেল ট্রেড করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী আসাদুর রহমান (জাহের উদ্দিনের বোন জামাই) পরিচয় গোপন করে পরস্পর যোগসাজসে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দরপত্র দাখিল করেন। এভাবেই তারা ওই পরিমাণ টাকা আত্মসাত করেন। দুদক আইনজীবী হারুনুর রশীদ জানান, আসামী ডা. চন্দন মালামাল ক্রয়. দরপত্র, বাজারদর যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন এবং তার সংপৃক্ততাতেই এই জলিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।

(এম/এসপি/জানুয়ারি ০২, ২০২০)