স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে তারা ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নিয়ে সহপাঠীর ধর্ষণের বিচার দাবি করছেন। তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশের সব সড়কের মুখে ব্যারিকেড দিয়েছেন। ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

অপরাজেয় বাংলায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, এগুলো কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এর প্রতিবাদে আগামীকাল বেলা ১১টায় ঢাবিসহ সারাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ইউনিটে একযোগে মানববন্ধন করবে ছাত্রলীগ।

তিনি বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা কেউ কটূক্তির শিকার হলে ভয় না পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করুন ও প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আপনাদের পাশে থাকবে সবসময়। এছাড়াও তিনি ধর্ষকদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

সকাল থেকে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করা হয়। প্রতিবাদের প্ল্যাকার্ডে তারা ‘বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘বিচার চাবো একসাথে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে’, ‘বিবেক এবার ঘোমটা খোলো’, ‘নো মোর মার্সি টু রেপিস্ট (ধর্ষকদের ক্ষমা নয়)’, ইত্যাদি লিখে আনেন।

দুপুর ১টার দিকে ভাঙা হাত নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর। তিনিও ধর্ষকের বিচারের দাবি জানান।

এদিকে ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকের বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। তারা ছাত্রীর ধর্ষককে অবিলম্বে গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

অবরোধের কারণে টিএসসি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, কারওয়ান বাজার ও মৎস্য ভবন- চারদিক থেকে শাহবাগ হয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় দিয়ে মোটরসাইকেল, রিকশা, এমনকি পতাকাবাহী সরকারি গাড়িও চলাচল করতে দিচ্ছেন না। কেবল অ্যাম্বুলেন্স যেতে জায়গা করে দিচ্ছেন তারা।

উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ঢাবির নিজস্ব বাসে রওনা দেন তিনি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামেন।

এরপর একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। ধর্ষণের পাশাপাশি তাকে নির্যাতনও করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে।

ধর্ষণের এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। রাত ১০টার দিকে নিজেকে একটি নির্জন জায়গায় আবিষ্কার করেন ওই ছাত্রী। পরে সিএনজি নিয়ে ঢামেকে আসেন। রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ০৬, ২০২০)