স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, আমাদের বোন ধর্ষণের ঘটনায় ইতোমধ্যে ছাত্র প্রতিনিধিরা আন্দোলনে নেমেছেন, সোচ্চার হয়েছেন। আমরা চাই ধর্ষকদের অবশ্যই চিহ্নিত করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেই আন্দোলন সকল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।

সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন থেকে এ কথা বলেন তিনি।

ভিপি নুর বলেন, ধর্ষকদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সকল শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি। একটা কথা বলা হয় যে, স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা নারী। এটাকে বলা হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এখনও নারীরা, আমার বোনরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ঘর থেকে বের হলেই তাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে তারা ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নিয়ে সহপাঠীর ধর্ষণের বিচার দাবি করছেন। তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশের সব সড়কের মুখে ব্যারিকেড দিয়েছেন। ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকের বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। তারা ছাত্রীর ধর্ষককে অবিলম্বে গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

অবরোধের কারণে টিএসসি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, কারওয়ান বাজার ও মৎস্য ভবন- চারদিক থেকে শাহবাগ হয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় দিয়ে মোটরসাইকেল, রিকশা, এমনকি পতাকাবাহী সরকারি গাড়িও চলাচল করতে দিচ্ছেন না। কেবল অ্যাম্বুলেন্স যেতে জায়গা করে দিচ্ছেন তারা।

উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ঢাবির নিজস্ব বাসে রওনা দেন তিনি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামেন।

এরপর একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। ধর্ষণের পাশাপাশি তাকে নির্যাতনও করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে।

ধর্ষণের এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। রাত ১০টার দিকে নিজেকে একটি নির্জন জায়গায় আবিষ্কার করেন ওই ছাত্রী। পরে সিএনজি নিয়ে ঢামেকে আসেন। রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ০৬, ২০২০)