স্টাফ রিপোর্টার : কাউকে গ্রেফতার করার এখতিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতির অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করতে হলে তাদের আইনশৃঙ্খলা সংস্থাকেই বলতে হবে। তারা নির্দেশ দিতে পারে। দুর্নীতি দমন কমিশনের কিন্তু কোনো গ্রেফতার করার এখতিয়ার নেই। কাউকে তারা ধরে রেখে ওখানে হাজতখানা বানাবে, হাজতে রাখবে, এটা কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ না। যার যার কাজ তার তার করতে হবে। এই কথাটা মাথায় রাখতে হবে।

সোমবার পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশ সদস্যদের একটি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, যেটা এখানে আপনারা একটা দাবি করেছেন- একজন বক্তব্যে বলেছেন যে, বিআরটিএ, বিআইডব্লিউটিএ, মাদক নিয়ন্ত্রণ ও দুর্নীতি দমন কমিশনে। দুর্নীতি দমন কমিশনে ইতোমধ্যে কিন্তু পুলিশ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আর অন্য জায়গাগুলোতে আমিও মনে করি সেখানে পুলিশের প্রতিনিধি থাকা দরকার। এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের জন্য নিরাপত্তা দেয়া প্রতিটি পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য। পুলিশকে জনতার পুলিশ হতে হবে। অবশ্য আগের চাইতে বর্তমানে পুলিশের ওপর মানুষের বিশ্বাস অনেক গুণ বেড়েছে। এ বিশ্বাস আরও বাড়াতে হবে। জনগণ যেন পুলিশকে বন্ধু ভাবতে পারে।

তিনি বলেন, আগে একটি থানায় ১০-১৫ জন করে লোক থাকত। তাদের লজেস্টিক সাপোর্টও ছিল না। এখন প্রত্যেক থানায় অফিসারের সংখ্যা, পদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পদোন্নতির সুযোগও বেড়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। কাজেই আপনারা হিসাব করে দেখেন আগে সুযোগ কেমন ছিল আর এখন কেমন। আপনাদের চাওয়ার কিছু নেই। চাওয়ার আগেই আপনাদের সব দেয়া হয়েছে। তারপরও যদি প্রয়োজন হয় সে প্রয়োজনও মেটানো হবে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হলে দাবি-দাওয়ার কথা বলতে হবে না। পুলিশের জন্য এ যাবৎ যা করেছি তা নিজে থেকেই করেছি। আমি জানি, যারা দেশের নিরাপত্তা দেবে তাদের নিরাপত্তা যদি না থাকে, তাহলে দেশ এগোবে না।

তিনি বলেন, ‘৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে দেখি পুলিশের বাজেট ৪০০ কোটি টাকা। আমরাই বাজেট দ্বিগুণ করে দেই। তখন পুলিশ রেশন পেত ২০ শতাংশ। সেটাও আমরা দ্বিগুণ করে দিয়েছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বিদেশে ঘোরার সময়কার একটি স্মৃতিচারণ করে সেখানকার ছোট ছোট সুন্দর গ্রাম দেখে বলেন, ৬৯ সালে বিদেশের এসব গ্রাম দেখে বাবা বলেছিলেন বাংলাদেশ একদিন স্বাধীন হবে। আমাদের গ্রামগুলো আমরা এভাবে সুন্দর করে গড়ে তুলব। দেশের মানুষ যেন ভালোভাবে উন্নত জীবন-যাপন করতে পারে সেভাবে দেশ গড়ব। কিন্তু তিনি তা পারেননি। আমরা তারই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছি। আজ আমাদের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৫ ভাগ। মাথাপিছু আয় প্রায় দুই হাজার মার্কিন ডলার। আগামী ৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত সমৃদদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব।

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এ ছাড়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ০৬, ২০২০)