নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর ধামইরহাটে কর্মহীন ও বেকার সময়ে কাজ পেয়ে খুশি এলাকার হাজারো কৃষি শ্রমিক। আমন ধান কাটার পর দীর্ঘ সময় কাজ না থাকায় শ্রমিকদের পরিবার নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হতো। কিন্তু বর্তমানে কাজ পেয়ে ওই সব পরিবারের অভাব অনটন দূর হচ্ছে। ফলে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটেছে।

জানা গেছে, নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে ধামইরহাট উপজেলা পরিচিত। এ উপজেলায় মুলত বছরে আমন ও বোরো ধান চাষ হয়। কিছু এলাকায় রবিশস্যও চাষ হয়। কিন্তু অধিকাংশ এলাকায় এই দুই ফসল তোলার পর দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় কৃষি কাজ থাকে না। ফলে এলাকার কৃষক-কৃষাণীদেরকে দীর্ঘদিন ধরে অলস সময় পার করতে হয়। এতে তৃণমূল পর্যায়ের কৃষি শ্রমিকদের আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়তে হয়।

কৃষি শ্রমিকদের আর যেন অলস সময় পার করতে না সে হয়, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৪০ দিনের অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী (ইজিপিপি) গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মোট ২৪টি প্রকল্প চালু রয়েছে। এতে মোট ১ হাজার ১শ’ ৯৭ জন কৃষি শ্রমিক কাজ করছে। সোমবার উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের অন্তর্গত কমরইল পশ্চিম আদিবাসী পাড়া থেকে পাকা রাস্তা পর্যন্ত ১ কিলো ২শ’ মিটার রাস্তার সংস্কার কাজ প্রকল্পে ৪৬ জন শ্রমিক কাজ করতে দেখা যায়।

ওই প্রকল্পের আদিবাসী কৃষি শ্রমিক আরতি পাহান বলেন, আমন ধান কাটার পর কৃষি কাজ না থাকায় অনেক কষ্ট করতে হয়। বর্তমানে ৪০ দিনের এ কাজ পেয়ে আমার সংসারের অভাব দূর হয়েছে। তাছাড়া এই প্রকল্পে কাজ করতে কাউকে কোন ঘুষ দিতে হয় না।

ময়েজ উদ্দিন নামে আরেক শ্রমিক বলেন, কাজ পেয়ে আমরা খুশি। পরিবারের মুখে আমরা দুটো ভাত তুলে দিতে পারছি। এতেই আমরা খুশি।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইস্রাফিল হোসেন বলেন, কর্মহীন ও বেকার সময়ে শ্রমিকরা যাতে বেকার না থাকে, সরকার সে জন্য এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। একজন শ্রমিক শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত একটানা মোট ৫দিন কাজ করেন। প্রতিদিন ২শ’ টাকা হারে তাদের মজুরী প্রত্যেক সপ্তাহে নিজ নিজ ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসেবে জমা করা হয়। এ প্রকল্পে এ উপজেলার মোট বরাদ্দ ৯৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকায় রাস্তা, ড্রেন, কবরস্থান, ঈদগাঁ মাঠ, খেলার মাঠ, জলাধারসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাটি কাটা ও সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন গ্রামীণ এলাকার রাস্তাঘাট উন্নত হচ্ছে অন্যদিকে বেকার সময়ে বসে না থেকে কাজ পেয়ে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আগামী ১৯ জানুয়ারি এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। ঠিক তখনি এলাকায় পুরোদমে বোরো ধান চাষ শুরু হবে। এতে কৃষি শ্রমিকদের আর বেকার থাকবে হবে না।

(বিএম/এসপি/জানুয়ারি ০৬, ২০২০)