বিজ্ঞান ডেস্ক : সম্ভবত নিউট্রিনো মহাবিশ্বের সবচাইতে বিস্ময়কর কণা । প্রতি সেকেন্ডে কোটি কোটি এই কণা পৃথিবীতে আঘাত করে একে আলোকিত করে। অনেকটা সময় ধরে বিজ্ঞানীরা ভাবতেন এর ভর নেই। আজ আমরা জানি নিউট্রিনোর ভর আছে। কিন্তু সেই ভর বা ওজন মাপার পদ্ধতি এখনো নিশ্চিত করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা ৷ জার্মানিতে একদল বিজ্ঞানী সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন।

পৃথিবীর অনেক দেশের ১০০ জনেরও বেশি বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞের একটি দলের অংশ হলেন ম্যাগনাস। ক্যাটরিন নামের একটি পরিমাপক দিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে জটিল ধাঁধাগুলো মেলাচ্ছেন এরা। পদার্থবিজ্ঞানী ম্যাগনাস বলেন, নিউট্রিনোর ভরের সীমার অর্ধেক বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগে যেটা ধারণা করা হতো দুই ইলেকট্রন ভোল্ট, এখন আমরা জানি তা এক ইলেকট্রন ভোল্টের চেয়েও কম। এর ধারণা করা কতটা কঠিন দেখুন, দশমিকের পরে একটি শূন্যের সঙ্গে আরো ৩৬টি শূন্য বসিয়ে তারপর এক বসালে যত কিলোগ্রাম হয় ততটা । খুবই কম ওজন ।

ড. ম্যাগনাসের ভাষায়, যেমন ধরুন, মহাবিশ্বের প্রতি ঘনসেন্টিমিটারে এখনো বিগব্যাংয়ের কারণে তৈরি হওয়া ৩০০ নিউট্রিনো আছে। তারওপর সূর্য, সুপারনোভা থেকে প্রচুর পরিমাণে নিউট্রিনো পৃথিবীর মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে। কিন্তু এরা একে অপরের সঙ্গে এত দুর্বলভাবে প্রতিক্রিয়া করে যে, কোটি কোটি নিউট্রন থাকার পরও আমরা কিছুই টের পাই না।

ম্যাগনাস বলেন, যদি ভর তৈরি হয় এবং আমরা সংবেদনশীলতার মাত্রায় পৌঁছাতে পারি, তাহলে এক পর্যায়ে এসে ভর পরিমাপ করতে পারি। এই মুহূর্তে এই হলো আমাদের সংবেদনশীলতার মাত্রা এবং এখন এর ভর হতে পারে ০ থেকে অনির্দিষ্ট পর্যন্ত। এখনো আমরা সুনির্দিষ্ট ভর পরিমাপ করতে পারিনি। তবে ঠিক পথেই আছি ।

বিজ্ঞানীরা ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ নিয়ে কাজ করবেন। এক হাজারটি পরিমাপ দিনে গেলে শেষ হবে এটি। আগামী কয়েকটি বছর খুব উত্তেজনায় কাটবে এদের। কারণ, নিউট্রিনো স্কেল বেশ ভালোই কাজ করছে। এই গবেষণার ফল পদার্থবিদ্যাকেই হয়তো বদলে দেবে ৷

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ০৭, ২০২০)