গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে অবস্থিত রংপুর চিনিকল লিমিটেডের সাহেবগঞ্জ ইক্ষুখামারের আখ কর্তনে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

অভিযোগে জানা গেছে, প্রতিমন আখ কর্তন সহ লোডিং এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ টাকা। কিন্তু চিনিকল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বঞ্চিত করে প্রতিমন আখ কর্তন ও লোডিং এ ব্যয় করছে ২৬ টাকা। বাকী টাকা যোগসাজস করে আখ কর্তনের সাথে জড়িতরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিচ্ছে। এতে করে সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমিকরা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নিয়মানুযায়ী আখ কর্তন টেন্ডারের মাধ্যমে হওয়ার কথা কিন্তু চিনিকল কর্তৃপক্ষ টেন্ডারে দাম বেশি হওয়ার অজুহাতে টেন্ডার বাতিল করে নিজেদের ব্যবস্থাপনায় আখ কর্তন করছে। আখ কর্তনে নিয়োজিত শ্রমিক সাইদুল ও ওয়াহেদুল জানালেন গতবার আখ কর্তন সহ লোডিং বাবদ তারা মন প্রতি ৩৪ টাকা করে পেয়েছিলেন এবারেও একই নিয়মে আখ কর্তন করা হচ্ছে কিন্তু আখ কর্তনের বিল ৩৪ টাকা করলেও তাদের বিল পরিশোধ করা হচ্ছে মন প্রতি ২৬ টাকা। এতে করে তারা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এরপর সময় মত মিলে আখ সরবরাহ না করায় ৫-৭ দিন মাঠে পড়ে থাকায় শুকে আখের ওজন কমে যায়। ফলে এখান থেকেও শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে অভিযোগ করেও তারা কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে তারা টাকা কম নিয়েই আখ কর্তন করছে। এ ব্যাপারে চিনিকলের ইক্ষু খামারের ম্যানেজার আইয়ুব আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনবার টেন্ডার করেও টেন্ডারের মূল্যে কম না হওয়ায় টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। এখন চিনিকলের ফিল্ডম্যানদের দায়িত্ব দিয়ে খামারের আখ কর্তন করা হচ্ছে। এতে সাশ্রয়ী মূল্যে আখ কর্তন সহ লোডিং করা সম্ভব হচ্ছে।

অতিরিক্ত ৮ টাকার বিষয়ে তিনি জানান, আখ কর্তনে যারা অর্থ বিনিয়োগ করেছেন তাদের তো লভ্যাংশ থাকতে হবে। যদি দরপত্রই করা না হয় ফিল্ডম্যানদের দায়িত্ব দিয়ে খামারের আখ কর্তন করা হয় তাহলে অর্থ বিনিয়োগের বিষয়টি কিভাবে আসে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদোত্তর দিতে পারেননি।

এ ঘটনায় রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা তো সরাসরি শ্রমিক দিয়ে কাজ করাতে পারব না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। মৌখিকভাবে স্থানীয় ঠিকাদার ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন ও রুহুল আমীনকে দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তাই ঠিকাদার টাকা বিনিয়োগ করবে। তাদের লভ্যাংশের ব্যাপার তো রয়েছে। ১১ হাজার ৫শ’ মেট্রিকটন আখ কর্তন করা হবে বলে চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানান। এতে করে উপরোক্ত আখ কর্তনে মোট খরচ বাদ দিয়ে অতিরিক্ত ২০ লাখ বারো হাজার ৫শ’ টাকা থাকে, যা অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে ব্যবস্থাপক, ম্যানেজারসহ আত্মসাতের পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ০৭, ২০২০)