আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের অভিজাত বাহিনী আইআরজিসির শাখা কুদসের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেইমানি হত্যাকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী নোয়াম চমস্কি।

বিশ্বের নামকরা রাজনৈতিক বিজ্ঞানী চমস্কি বিশ্বাস করেন, ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ। এর চেয়ে অধিকতর খারাপ আর কিছুই হতে পারে না। কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার ঘটনা আন্তর্জাতিক আইনেরও লঙ্ঘন বলে জানান তিনি।

গত ৩ জানুয়ারি বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হওয়ার ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ সেদিনই এক টুইট করেন। জারিফের সেই টুইট নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন নোয়াম চমস্কি।

মার্কিন এই ভাষাতত্ত্বিক ও অ্যাক্টিভিস্ট যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি এবং গোটা বিশ্বে মার্কিন সেনাদের ভূমিকার একজন কট্টর সমালোচক। তিনি ভারতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, ‘এটা (সেলেইমানি হত্যাকাণ্ড) নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, যুক্তিতর্ক হলে তো তা আরও ভয়াবহ অপরাধ।’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার টুইটে বলেন, ‘সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের নিকৃষ্টতম উদাহরণ। মার্কিন সন্ত্রাসী বাহিনীর বর্বরতা ও বোকামি নিঃসন্দেহে এই অঞ্চল (মধ্যপ্রাচ্য) ও বিশ্বে প্রতিরোধের সক্ষমতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে। যুক্তরাষ্ট্রকে তার এই দুর্বল ও বিপজ্জনক কাজের সমস্ত পরিণতির দায়ভার বহন করতে হবে।’

সোলেইমানি হত্যকাণ্ড নিয়ে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) ও ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার অধ্যাপক চমস্কি বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন খুবই স্পষ্ট। এই আইনে আন্তর্জাতিকভাবে হুমকি দেয়া বা সামরিক শক্তির প্রয়োগ নিষিদ্ধ হলেও তা লঙ্ঘন করে সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে।’

চমস্কি আরও বলেন, ‘আগামীতে পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর আধিপত্য হ্রাস পাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। অঞ্চলটিতে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বছরের পর বছর ধরে তাদের নীতিত অটল এবং তা থেকে সরে আসার সম্ভাবনাও খুব ক্ষীণ।’ তবে ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসন চালানোর পর শক্তি কিছুটা কমেছে বলে মনে করেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি সোলেইমানি এবং ইরাকের হাশদ আল-শাবি নামে পরিচিত পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিটের (পিএমইউ) প্রধান আবু মাহদি আল-মুহানদিস ও তাদের আট অনুসারী গত ৩ জানুয়ারি বাগদাদ বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৩, ২০২০)