নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত ধলেশ্বরী নদীর উপর  নির্মিত শেখ হাসিনা সেতুর উপরিভাগের ঢালাই উঠে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার পাশাপাশি প্রানহানির আশঙ্কা করছেন এ সেতু দিয়ে চলাচলকারী সাধারন মানুষ। সেতু নির্মাণের দুই বছরের মাথায় এমন ভাবে ভেঙ্গে গর্ত হওয়ায় যাত্রী সাধারনের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। 

এদিকে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছ থেকে সেতু বুঝে নেয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, এ সেতুর কাগজপত্র পাওয়া যায়নি বিধায় প্রয়োজনীয় সংস্কারে বিলম্ব হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাগরপুর-মির্জাপুর সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য নাগরপুর উপজেলার কেদারপুরে ধলেশ্বরী নদীতে ৫২০.৬০ মিটার পিসি গার্ডার সেতু নির্মানের উদ্যোগ নেয় সরকার। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ৫৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকায় প্রকল্পের কার্যাদেশ পেয়ে দীর্ঘ আড়াই বছর কর্মযজ্ঞ শেষে ২০১৭ সালের প্রথম দিকে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করে মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সালের শেষের দিকে জনসাধারনের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় সেতুটি। কিন্তু এত অল্প সময়ের ব্যবধানে সেতুর এমন বেহাল দশায় এর নির্মানশৈলী নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এ সেতু দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ।

সরেজমিনে সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর বিভিন্নস্থানে উপরিভাগের ঢালাইকৃত ওয়ারিং কোর্স ( পাথর, বালি ও সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা) ভেঙ্গে স্তুপ হয়ে রয়েছে। এর উপর দিয়ে দ্রুত গতির যানবাহন চলাচলে দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

এ সেতু দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী এসবি লিংক পরিবহনের ড্রাইভার সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বছরের মাঝামাঝি এ সেতুর ঢালাই উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। তখন দায়সারাভাবে জোড়াতালি মেরামত করা হয়েছিল বলেই আজ আবার সেতুর এ অবস্থা হয়েছে। আমরা গাড়ি নিয়ে সেতুর উপর দিয়ে যেতে আতঙ্কের মধ্যে থাকি।

শিক্ষক মো.রফিকুজ্জামান ক্ষোভের সূরে বলেন, এমনিতেই সেতুতে বেশ কয়েকবার মোটর সাইকেল (বাইক) দূর্ঘটনায় দুইজনের প্রানহানী ঘটেছে। তার উপর সেতুর বিভিন্নস্থানে গর্ত তাই দ্রুত সেতুটি সংস্কার না করলে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে সেতুটি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধানে নির্মিত হলেও গত এক বছর আগে তা সড়ক ও জনপথ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান ফারহান জানান, নাগরপুরের কেদারপুরে ধলেশ্বরী নদীর উপর নির্মিত শেখ হাসিনা সেতুটি গত এক বছর আগে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর আমাদের কাছে হস্তান্তর করলেও এর কাগজপত্র এখনও হাতে পাইনি তাই এর যথাযথ সংস্কারে বিলম্ব হচ্ছে। কাগজপত্র হাতে পেলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের রিপেয়ারিং (সংস্কার) এর বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আর যেটুকু ক্ষতি হয়েছে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হবে বলেও জানান প্রকৌশলী ইমরান ফারহান ।

(আরএস/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০২০)