স্বপন কুমার কুন্ডু : বিশ্বের প্রথম ভাসমান পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একাডেমিক লামানোসভ রাশিয়ার দূর প্রাচ্যের চুকোতকা অঞ্চলের পেভেক শহরের চাউন-বিলবিনো নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে সম্প্রতি বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে। রুশ রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন রসাটমের বাংলাদেশের গণমাধ্যম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্র জানিয়েছেন। 

রুশ রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন রসাটমের প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্ডার লিখাচভ এ উপলক্ষ্যে প্রদত্ত বক্তব্যে বলেন, “একাডেমিক লামানোসভ হলো বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যা ক্ষুদ্র মডিউলার রিয়্যাক্টর প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। রাশিয়া এবং বিশ্বের পারমাণবিক শিল্পে এটি একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক”।

বিশ্বের বিজ্ঞানী, পরমাণু বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবাদীরা এই প্রকল্পটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।

লল্ডনভিত্তিক এনজিও এনার্জি ফর হিউমিনিটির প্রধান ক্রিস্টি গোগান তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “অত্যন্ত বিরূপ জলবায়ুর দূর্গম অঞ্চল, যেখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবহার টেকসই নয় এবং জীবাশ্ম জ্বালানীর ওপর পুরোপুরি নির্ভর করাও সম্ভব নয়, এমন অবস্থায় ক্ষুদ্র এবং ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই একমাত্র সমাধান। আর্কটিকসহ অন্যান্য অঞ্চলকে কার্বনমূক্ত করার ক্ষেত্রে একাডেমিক লামানোসভ প্রথম পদক্ষেপ”।

বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম শুরু করার পর একাডেমিক লামানোসভ হবে রাশিয়ার ১১তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। রুশ নির্মিত ক্ষুদ্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো দেশটির উত্তর এবং দূরপ্রাচ্য অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে ব্যবহার করা ছাড়াও অন্যান্য দেশেও রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে।

১৪৪ মিটার দীর্ঘ এবং ৩০ মিটার প্রশস্থ ভাসমান একাডেমিক লামানোসভে দু’টি কেএলটি-৪০সি রিয়্যাক্টর ব্যবহার করা হচ্ছে, যার প্রতিটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩৫ মেগা-ওয়াট।

ক্ষুদ্র মডিউলার রিয়্যাক্টরভিত্তিক ৩০০ মেগা-ওয়াটের কম উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রেগুলো জলে বা স্থলে কাজ করতে সক্ষম এবং রি-ফুয়েলিং ছাড়াই অনবরত ৩-৫ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।

(এসকেকে/এসপি/জানুয়ারি ২৫, ২০২০)