স্টাফ রিপোর্টার : নিবন্ধন ছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র (ডে কেয়ার সেন্টার) পরিচালনায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন-২০২০’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যেহেতু এখন যৌথ পরিবার প্রথাটা একটু কমে আসছে এবং নারীরা বেশি বেশি করে কাজে ইনভল্ব হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য তাদের ছোট বাচ্চাদের দেখাশোনা করার জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।’

প্রস্তাবিত আইনে চার ধরনের শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের বিধান রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি ভর্তুকিপ্রাপ্ত, সরকার অথবা সরকারি কোনো দফতর, অধিদফতর, পরিদফতর, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা অথবা কোনো স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বিনামূ্ল্যে পরিচালিত; ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত এবং ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা বা সংঘ বা সমিতি বা করপোরেট সেক্টর বা শিল্পখাতের অলাভজনক উদ্দেশ্যে পরিচালিত শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র।’

খন্দকার আনোয়ার বলেন, ‘আইন অনুযায়ী শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে প্রদেয় সেবার গুণগত মান, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, সুরক্ষা, বিনোদন, শিক্ষা, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বা অনুরূপ বিষয়গুলো বিধি দিয়ে নির্ধারিত মান নিশ্চিত করা হবে।’

‘প্রতিটি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে মাতৃদুগ্ধ পানকারী শিশুদের জন্য নির্ধারিত জায়গা রাখতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্রে বিশেষভাবে অবকাঠামো সুবিধা রাখতে হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।’

আইন প্রণয়ন হলে নারীর ক্ষমতায়নের সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুর পরিচর্যা ও সুরক্ষা নিশ্চিত হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

শিশুদের পরিচর্যার জন্য বিশ্বস্ত সহায়ক সেবাযত্ন কেন্দ্রের অভাব পরিলক্ষিত হওয়ায় এই আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিবন্ধন পরিদফতর থেকে শিশু দিবা যত্ন কেন্দ্র পরিচালনার জন্য নিবন্ধন নিতে হবে। তিন বছরের জন্য নিবন্ধন দেয়া হবে।’

আইনের অধীনে প্রণীত বিধিতে সবকিছু বিস্তারিতভাবে বলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন খন্দকার আনোয়ারুল।

তিনি বলেন, ‘খসড়া আইন অনুযায়ী নিবন্ধন না করে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। সনদ প্রদর্শন না করা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী কেন্দ্র পরিদর্শনে প্রতিবন্ধকতা করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। শিশুর নিরাপত্তা ঘাটতি থাকলে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। সংক্রামক রোগের তথ্য গোপন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা। মিথ্যা বা ভুল তথ্য দিলে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা বা দুই মাসের কারাদণ্ড দেয়া হবে।

বিধি দিয়ে নিবন্ধন ফি নির্ধারণ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৭, ২০২০)