আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও মাঘ মাসের কৃষ্ণ পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বিদ্যার ও নৃত্য কলার দেবী সরস্বতীর পূজা। পূজা উপলক্ষে শীতকে উপেক্ষা করে বিদ্যার আরাধ্য দেবী সরস্বতী প্রতিমা তৈরিতে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পাল পাড়ার মৃৎশিল্পীরা। আর মাত্র দুই দিন পরে জ্ঞানের আলো ছড়াতে অনুষ্ঠিত হবে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর পূজা। তাই শেষ সময়ে মৃৎশিল্পীদেরও পাশাপাশি বাড়ি নারী শিল্পীদেরও বিশ্রামের সময় নেই।

দিন রাত প্রতীমা তৈরীতে ব্যস্ত তারা, ব্যস্ততার কমতি নেই তাদের বাড়ির নারী শিল্পীদেরও। খড়, কাঠ, বাঁশ ও মাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমার গায়ে দেয়া হচ্ছে মাটির শেষ প্রলেপ ও রং। আগেই রোদে শুকিয়ে মাটির অলঙ্কার পরানোর কাজ শেষ করেছেন শিল্পীরা।

উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা পাল পাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পী শিবু পাল, তার স্ত্রী কল্পনা পাল, একই বাড়ির জয়দেব পাল, কানাই পাল, লিটন পাল, জানান, সারা বছরই বিভিন্ন দেব দেবীর প্রতীমা বাড়িতে তৈরি করেন তারা। আবার অর্ডার অনুযায়ি বাড়িতে গিয়েও প্রতীমা তৈরী করে থাকেন তারা। তবে বিভিন্ন মাসে বিভিন্ন পূজা অনুষ্ঠিত হবার কারণে মৌসুমের সময় অনুযায়ি তারা প্রতীমা তৈরী করেন। বর্তমানে সরস্বতী প্রতীমাই তৈরী করছেন তারা।

আগামী ২৯ জানুয়ারি বুধবার সকাল সোয়া নয়টা থেকে পঞ্চমী তিথি শুরু হয়ে শেষ হবে বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি সকাল ১১টা ২৫মিনিট পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে প্রতিটি হিন্দু বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তাই পূজাকে সামনে রেখে সরস্বতী প্রতিমা বানাচ্ছেন তারা।

শিল্পীরা আরও বলেন, দু’রকমের প্রতীমা তৈরী করেন তারা। ছাঁচে (ডাইস) নির্মিত ও ব্যানায় নির্মিত প্রতীমা। ছাঁচে নির্মিত প্রতীমা ৫০ থেকে ২শ টাকা এবং ব্যানায় নির্মিত প্রতীমা ৫শ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি বিক্রি করে আসছেন তারা। বিক্রির উদ্যেশ্যে অন্তত শতাধিক প্রতীমা তৈরি করেছেন তারা। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের পছন্দ মতো প্রতীমার নির্মানের অর্ডার দিয়েছেন। ওই প্রতীমার কাজও শেষ করে তা ডেলিভারী দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। পুরুষ শিল্পীদের সাথে নারী শিল্পীরাও কাজ করছেন দু’হাতে সমান তালে। বুধবার বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনায় নতজানু থাকবে হিন্দু ধর্মালম্বীরা।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ২৭, ২০২০)