স্টাফ রির্পোটার : বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধে হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা শাহীন আরা লাইলী। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন তিনি।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী রবিবার রিট আবেদনের শুনানি হতে পারে।
রিটে বিবাদী করা হয়েছে, তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে।
আবেদনে বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।
এছাড়া ভারতের তিনটি চ্যানেল স্টার জলসা, স্টার প্লাস ও জি বাংলা ৭ দিনের মধ্যে সম্প্রচার বন্ধ করে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আবেদনকারীর আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ভারতে বাংলাদেশের কোনো টিভি চ্যানেল প্রচার হয় না। অথচ বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের অবাধ সম্প্রচারের ফলে যুব সমাজ ধংসের সম্মুখীন। সর্বশেষ তাদের একটি টিভি চ্যানেল স্টার জলসার ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’ সিরিয়ালের পাখি চরিত্রের নামে পোশাক কিনতে না পেরে বাংলাদেশে অনেকে আত্মহত্যা করেছে। তাই যুব সমাজকে রক্ষার্থে এ রিট করা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার বিকালে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ বিষয়ে আইনি নোটিশ পাঠান আইনজীবী এখলাস উদ্দিন ভূঁইয়া। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করা হবে বলে নোটিশে জানানো হয়।
নোটিশে বিবাদী করা হয় তথ্যমন্ত্রী, তথ্যসচিব ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে(বিটিআরসি)।
এখলাস উদ্দিন জানান, ভারতে আমাদের দেশের চ্যানেল সম্প্রচারের অনুমতি দেয় না। কিন্তু আমাদের দেশে তাদের চ্যানেল চলছে। আর এতে সামাজিক অবক্ষয় ঘটেছে। সর্বশেষ তাদের একটি টিভি চ্যানেলের সিরিয়ালের চরিত্রের নামে পোশাক কিনতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যা করেছে।
তিনি বলেন, ‘দৈনিক আমাদের সময়’-এ এ নিয়ে শনিবার ‘পাখি প্রেমে প্রাণ বিসর্জন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দেশের ঘরে-ঘরে বাড়ছে ভারতীয় ধারাবাহিক নাটকের জনপ্রিয়তা। এসব সিরিয়ালপ্রীতির কারণে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ক্রমেই দর্শক হারাচ্ছে, দেশ হারাচ্ছে নিজস্ব সংস্কৃতি। কিশোরী-তরুণীদের ফ্যাশনেও এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সর্বশেষ, ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল স্টার জলসার ‘বোঝে না সে বোঝে না’ সিরিয়ালের ‘পাখি’র প্রেমে প্রাণ গেল এক যুবক ও মেয়েশিশুর।’
‘পাখি চরিত্রে রূপদানকারী তরুণীর পোশাকের অনুকরণে এবার ‘পাখি’ নামের একটি পোশাক দেশের ঈদবাজারে জমজমাট ব্যবসা করেছে। ঈদে চড়া মূল্যের এ জামা নতুন স্ত্রীকে কিনে দিতে না পারার ব্যর্থতায় আত্মহত্যা করেছে প্রান্তিক শ্রেণির এক যুবক। ঈদের আগের দিন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের নন্দ তেঘরী গ্রামে শাহীন নামের ওই যুবক আত্মঘাতী হয়।’
‘পাখির মরণকামড় থেকে ছাড় পায়নি দশ বছরের শিশুও। পাখি নামের পোশাক না পেয়ে অভিমানে ঈদের দু’দিন আগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নূরজাহান নামে দ্বিতীয় শ্রেণীর এক স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।’
(ওএস/এএস/আগস্ট ০৭, ২০১৪)