মাদারীপুর প্রতিনিধি : পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চ পিনাক-৬ এর তল্লাশিতে যোগ দিয়েছে চট্টগ্রাম থেকে আসা বিশেষ জাহাজ কান্ডারি-২। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জোরেশোরে চলছে তল্লাশি অভিযান। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ভোলা, চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও বরিশালে পদ্মা-মেঘনা থেকে মোট ২৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে দুর্ঘটনার চারদিনেও লঞ্চের অবস্থান শনাক্ত হয়নি। এখনো নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক যাত্রী।
বিআইডব্লিউটিএ, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ডসহ কয়েকটি সংস্থার একাধিক জাহাজ দফায় দফায় উদ্ধার অভিযান চালিয়েও বুধবার পর্যন্ত লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করতে পারেনি। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত স্ক্যান করেও লঞ্চের অবস্থান নিশ্চিত হতে পারছে না সংস্থাগুলো।
এ দিকে প্রিয়জন হারানোদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পদ্মাচরের বাতাস। স্বজন হারানোদের অশ্রু পদ্মার পানির সঙ্গে মিশে যেন একাকার হয়ে যাচ্ছে। অপেক্ষায় থাকা কেউ আর আশা করছেন না তাদের প্রিয়জন জীবিত ফিরে আসবে। তবে লাশ পেতেও যে এত অপেক্ষা করতে হবে সেটাও ভাবতে পারেননি কেউ। অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হচ্ছে না।
দুর্ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও লঞ্চের অনুসন্ধান বা নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারকাজে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় পদ্মাপাড়ে স্বজনদের ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। হতাশা গ্রাস করছে তাদের।
গতকাল পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় মোট ২২ জনের মরদেহ। এর আগে লঞ্চডুবির পরপরই চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। গতকাল রাত ১টা পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে আরো ১৭ জনের মরদেহ। বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত মাওয়া ঘাটে স্থাপিত পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হিসাবে নিখোঁজের তালিকায় রয়েছে আরো ১৩৭ জন।
প্রসঙ্গত, সোমবার মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে এমএল পিনাক-৬ নামের একটি ছোট লঞ্চ মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পথিমধ্যে কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে ৩০-৩৫ জন যাত্রী ওঠানো হয়। লঞ্চটি মাওয়ার অংশের উত্তাল পদ্মা পাড়ি দেয়ার সময় ঢেউ, দমকা বাতাস ও ঘূর্ণিস্রোতে আক্রান্ত হয়। পরে কাত হয়ে এক মিনিটের মধ্যেই ডুবে যায়।
(ওএস/এএস/আগস্ট ০৭, ২০১৪)