জানে হৃদয় : কবি মানিক বৈরাগী'র ৪৯তম জন্মবার্ষিকী ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি। প্রতিবারের মতোই এবারও পালিত হয়েছে জন্ম উৎসব। মজার ব্যাপার হলো অসুস্থ এ কবি নিজ উদ্যোগে কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন পালন করেননি। তবে প্রতিবছরই পালিত হয়েছে তার ভক্ত ও অনুরাগীদের উদ্যোগে।

২৮ অক্টোবর কবি সাহিত্যিক কাব্যানুরাগীও শুভানুধ্যায়ীদের পদচারণে মুখরিত ওয়ে ওঠে কবির শহরের বাসায়।জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন কবিকে। অবশ্যই জন্মদিনের অনুষ্ঠান বললে যে রকমের জাঁকজমক, আনুষ্ঠানিকতার কথা মনে আসে তেমন নয়।সাদামাটা ঘরোয়া আয়োজন। কিন্তু নিখাদ শ্রদ্ধা ও হৃদয়ের নিবিড় প্রীতিতে উষ্ণ ছিলো আয়োজন।

কবির বাড়িতে প্রথমে জন্মদিন উদযাপন করেন সাংস্কৃতিক সংগঠন 'বিজয় মুখ'সংঘঠনের সভাপতি অজয় মজুমদার সহ একঝাঁক তরুন শিল্পী কেক কাটার আনুষ্ঠানিকতা শেষে কবিকে নিয়ে মেতে উঠেন আনন্দময় আড্ডায়।

এ সময় কবির প্রথম কাব্য গ্রন্থ 'গহীনে দ্রোহ নীল' থেকে সম্মিলিত কন্ঠে আবৃত্তি করেন।চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে থাকা অসুস্থ কবির চোখ ছলছল।

এররপর যথাক্রমে সত্যসেন শিল্পী গোষ্ঠী, কক্সবাজার তবলা ইনস্টিউটসহ অনেক সামাজিক সাংস্কৃতিক ও আবৃত্তি সংগঠন অংশ গ্রহণ করেন।

বিজয় মুখ এর পক্ষ নেতৃত্ব দেন অজয় ও আনিকা।সত্যেন সেন এর পক্ষ থেকে মনির মোবারক, তবলা ইনস্টিটিউট এর পক্ষ থেকে তিলক কর, শ্রুতির পক্ষে সৌরভ দেব, কবি ফয়সাল শাকিব।

তাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন জেলা খেলাঘর আসর এর সাবেক সদস্য সচিব কবি রিদুয়ান আলী। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ও পরিবেশ বাদী সংগঠক আজিজ ও জোসনা রহমান।আহমদ ছফা চর্চা পর্ষদ
থেকে কবি শান্তনু মনির ও পলাশ।উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ রিয়াদ।

সবশেষে বিশেষ শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন সাংস্কৃতিক সংঠন 'শ্রুতি'। তারাও অন্যদের মতো কেককাটার পর কবির লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন।এসময় কবি সবার অনুরুধে তাঁর জীবেনের বিভিন্ন পর্বের কয়েকটি স্মৃতি চারণ করেন।

এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পত্র-পত্রিকা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ কবিকে সারাদিন ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

কবি কথা বললেন খুব কম নিখাদ শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও প্রীতিতে উষ্ণতায় ভরা ভালোবাসা পেয়ে আপ্লুত কবি মানিক বৈরাগী। প্রিয়জনদের কাছ থেকে এমন ভালোবাসা তার জীবনের সেরা দিন হয়ে থাকবে বলে জানান।

কবি বলেন, আমি আজকের এই দিনটার জন্য আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি আবেগে আপ্লুত। যারা আমার এই ক্ষুদ্র জীবনকে ভালোবাসা দিয়ে রাঙিয়েছেন তাদের অনেক ধন্যবাদ।

.....................…............

"দরিয়ার জলে জ্বলে চেতন জোসনায় ফসফরাসের আগুন
আমি সমুদ্রের বিদির্ণ প্রান্তরে ফতুর হওয়া প্রেমের ঢেউ গুনি"
মানিক বৈরাগী

সমুদ্রনগরের ভূমিপুত্র, সমুদ্রের সাথেই তাঁর বেড়ে ওঠা, সমুদ্রের তীরে তাঁর শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি, সমুদ্রের তীরজুড়ে তাঁর পূর্বপুরুষের ঠিকানা; সমুদ্রের সাথে তাঁর নাড়ির টান। গেলো ২৮তারিখ সমুদ্রসন্তান কবি মানিক বৈরাগীর জন্মদিন। তাঁর কবিতায় সমুদ্র নানা ব্যঞ্জনায় আবিষ্কৃত হয়েছে।
এছাড়াও তাঁর কবিতায় মধ্যবিত্তের সংকট ও জীবনযন্ত্রণা গভীরভাবে ফুটে উঠেছে। সামাজিক বাস্তবতা, মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংগ্রামী চেতনা এবং সমকালীন যুগ যন্ত্রণা তার কবিতায় শিল্পসম্মতভাবে পরিস্ফুটিত হয়েছে।

নিরন্তর অধ্যাবসায়ী, এই বরেণ্য কবির ৪৯তম জন্মদিনে আমরা তাঁর সুস্থতা, দীর্ঘায়ু এবং সার্বিক কল্যাণ কামনা করছি।

(জে/এসপি/জানুয়ারি ৩০, ২০২০)