সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : গাজীপুরের কাপাসিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায় অবৈধভাবে ব্যাটারি পুড়িয়ে চলছে সীসা তৈরীর কাজ করার অপরাধে বৃহস্পতিবার বিকেলে  উলেপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসা: ইসমত আরা’র নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত দু’টি অবৈধ সীসা কারখানা অভিযান চালিয়ে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করা হয় এবং কারখানা দুটি বন্ধ করে দেয়।এ সময় কারখানায় কাজ করার সময় আদালত দুইজনকে আটক করে পরে তাদেরকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়।

জানা যায়, উপজেলার সিংহশ্রীর বড়িবাড়ি এলাকার জনাবালীর টেক এবং রায়েদের ভূলেশ্বর এলাকার বেলাভাঙ্গা বাজার সংলগ্ন নির্জন স্থানে স্থানীয় প্রভাবশালীরা পুরাতন ব্যাটারী পুড়িয়ে সীসা তৈরীর কারখানা তৈরী করে। ওই ব্যক্তিরা গাইবান্ধা, মানিকগঞ্জ, বগুড়া, শ্রীপুর ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন এসে এই এলাকার পুরাতন ব্যাটারী কিনে এনে কারখানায় পুড়িয়ে সীসা তৈরী করে। আর এই কারখানা থেকে নির্গত হচ্ছে বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা। আক্রান্ত হচ্ছে ফসলেন জমি আর ওই এলাকার মাঠের ঘাস খেয়ে গবাদি পশু মারা যাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

কারখানা গুলোর চারপাশে টিনের বেড়ার তৈরি ঘরে চলছে কারখানার কাজ। কোনো সাইনবোর্ড না থাকলেও কাছে গেলেই বোঝা যায়, ভিতরে রয়েছে কারখানা। এখানে পুরনো ব্যাটারি পুড়িয়ে সীসা উৎপদনের কাজ চলছে রাতদিন। কারখানা থেকে বের হচ্ছে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া। তা ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। এই ধোঁয়ার কারণে আশপাশের এলাকাবাসীর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে ওই এলাকার অনেক শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ব্যাটারির ধোঁয়া ঘাসের ওপর পড়ে। আর সেই ঘাস খেলে ই মারা যায়। এ পর্যন্ত ১৫/২০টি গরু মারা গেছে ওই এলাকায়।

এছাড়া আম, কাঁঠাল ও বিভিন্ন ফলমূলেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। এ কারখানায় যারা কাজ করছে, তাদের অনেকের বয়স ১৮ বছরের কম। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার সময় কোনো মাস্কও ব্যবহার করে না শ্রমিকরা। তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও কারখানা সংলগ্ন স্থানে। দুই ভাগে ভাগ হয়ে ২৪ ঘণ্টাই কাজ করছে শ্রমিকরা।

দিনের শ্রমিকরা ব্যাটারি ভেঙে খুলে রাখেন, আর রাতে চলে ব্যাটারি পোড়ানোর কাজ। এভাবেই চলছে কারখানার কাজ। অভিযান পরিচালনার সময় অন্যান্যের মাঝে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আনিসুর রহমান, থানার এএসআই কায়েশ, উপজেলা ডেইরী খামারী এসোসিয়েশনের কর্মকর্তা শরীফ সহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

(এসকেডি/এসপি/জানুয়ারি ৩১, ২০২০)