স্বাস্থ্য ডেস্ক : হরমোন ও শারীরিক পরিবর্তনের ফলে গর্ভাবস্থায় নানা ধরনের ব্যথা হয়। যত শরীর ভারী হতে শুরু করে, তত বাড়ে তার প্রকোপ। ওষুধপত্রও এ সময়ে বিশেষ খাওয়া যায় না। ফলে সাধারণ নিয়মকানুন মেনে সেসব কমিয়ে রাখতে হয়।

এ সময় সবচেয়ে বেশি হয় পা–কোমর ব্যথা। প্রায় ৫০ শতাংশ গর্ভবতী নারীর পায়ের শিরায় টান ধরে অসহ্য ব্যথা হয়। কারও হয় কবজি ব্যথা। প্রসবের পর ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যায়। কাজেই উপশমের উপায় জানলে তেমন ভয়ের কিছু নেই। এমন ব্যথা কমানোর কিছু কৌশল নিচে দেয়া হলো-

পায়ের শিরায় টান

রাতে বিছানায় যাওয়ার পরই বেশি হয়। পায়ের মাংসল অংশে শুরু হয় তীব্র যন্ত্রণা। এ ক্ষেত্রে পা মেলে পায়ের পাতাকে হাত দিয়ে নিজের দিকে টানলে কষ্ট কমে যায়। মালিশ করলেও আরাম হয়।

সমস্যা এড়াতে শোওয়ার আগে দেয়ালে হাত রেখে দু’ফুট মতো দূরে দাঁড়িয়ে, সামনে ঝুঁকে ১০ থেকে ৫ সেকেন্ড রিল্যাক্স করুন। ৩–৪ বার করুন।

পানি খান পর্যাপ্ত। মদ, মিষ্টি, কোমলপানীয়, চর্বিযুক্ত খাবার কম খান। না কমলে দিনে ২–৩ বার ৪০০ মিগ্রা ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন ই খেতে পারেন।

কোমর ব্যথা

হাঁটা, যোগ, সাঁতার বা অ্যারোবিক্স করুন। ভারী জিনিস তুলবেন না। বাচ্চাকে চেয়ার বা বিছানায় উঠিয়ে তবে কোলে নিন। মাটি থেকে কিছু তুলতে হলে কোমর ঝোঁকাবেন না, হাঁটু ভেঙে তুলুন। ভারী জিনিস বইতে হলে দু’হাতে ওজন ভাগ করে নিন।

হিল তোলা জুতার বদলে ফ্ল্যাট বা ভালো স্পোর্টস জুতা পরুন। সোজা হয়ে দাঁড়ান। কোমরের কাছে কুশন দিয়ে সোজা বসুন। পায়ের ওপর পা রেখে বসবেন না। এতে কোমরে বেশি চাপ পড়ে।

পাশে বা পেছনে কিছু করতে গেলে সেই দিকে ঘুরে কাজটা করুন। পাশ ফিরে শোওয়ার সময় পেটের নীচে বালিশ রাখুন। আরামদায়ক, দৃঢ় বিছানায় ঘুমান। গদি নরম হলে উপরে কার্ডবোর্ড লাগান। বিশ্রাম নিন। ডাক্তারের পরামর্শ মতো সাপোর্ট করসেট পরুন।

পা ব্যথা

কিছুক্ষণ দাঁড়ালেই যদি পা ব্যথা হয়, শরীরের ওজন দু’পায়ে সমানভাবে রেখে ও হাঁটু রিল্যাক্সড রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। আরামদায়ক জুতা পরুন। একটানা দাঁড়িয়ে না থেকে মাঝে মাঝে হাঁটুন। একটু বসুন।

কারপাল টানেল সিনড্রোম

গর্ভাবস্থায় ১৮–২০ সপ্তাহের পর হাতের পাতা ফুললে নার্ভে চাপ পড়ে শুরু হয় কবজি ব্যথা, আঙুলে সূচ ফোটানোর অনুভূতি ও আঙুলের গাঁটে আড়ষ্ট ভাব। রাতে কষ্ট বাড়ে। ব্যাঘাত হয় ঘুমের। রোগের প্রকোপ কমাতে, ঘুমের সময় হাত বালিশের উপর রাখুন, যাতে তরল জমতে না পারে। সকালে উঠে হাত ঝুলিয়ে জোরে ঝাঁকান। কষ্ট বেশি হলে স্প্লিন্ট পরতে পারেন।

তবে এসব উপায়েও ব্যথা আয়ত্তে আনতে না পারলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আনন্দবাজার।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২০)