স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে ম্যাগনেটিক রাইস পুলার কয়েন ব্যবসার প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা ২০ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার তিনজন হলেন- বরগুনার বেতাগী উপজেলার জসিম উদ্দিন (৪২), বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সুজন মিয়া (৩২) এবং বরগুনার বেতাগী উপজেলার লাল মিয়া।

সিআইডি জানায়, ম্যাগনেটিক রাইস কয়েনের ব্যবসার প্রতারক চক্রের একটি দলকে ৯০ লাখ টাকা দিয়ে প্রতারিত হন জাতীয় পার্টির সাবেক এক সংসদ সদস্য। ওই ঘটনায় তার দায়ের করা মামলার তদন্তের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মালিবাগ কার্যালয়ে সিআইডি বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

মোস্তফা কামাল বলেন, প্রতারক চক্রটি ২০১৯ সালের জুলাইয়ে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য শিল্পপতি প্রকৌশলী এম তালহাকে জানান, তাদের কাছে বহু মূল্যবান ম্যাগনেটিক রাইস পুলার কয়েন আছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ আমলের এই ম্যাগনেটিক কয়েনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যারেনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন- নাসার কাছে এগুলো কোটি টাকায় বিক্রি করা যাবে। কৌতূহলী হয়ে কথিত কয়েন দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ওই নেতা। এরপর প্রতারক চক্রের সাথে তার দরদাম হয়।

প্রতারক চক্রটি পরে ভিকটিম তালহাকে গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে নিয়ে যায়। সেখানে আমিনুল ইসলাম নামে চক্রের আরেক সদস্য ছিল। তিনি নিজেকে ইউরেনিয়াম এনার্জি লিমিটেডের সিনিয়র টেকনিশিয়ান হিসেবে পরিচয় দেন।

সেখানে আমিনুল ইসলাম তালহাকে বলেন, বাংলাদেশের অনেক নামি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি তার মাধ্যমে ম্যাগনেটিক কয়েনের ব্যবসা করেই সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। জাতীয় পার্টির ওই নেতা আগ্রহ দেখালে প্রতারক চক্রের একাধিক সদস্য বিভিন্ন সময়ে তার বাসায় যান। নানা ধরনের কথা বলে তাদের সাথে ম্যাগনেটিক কয়েন ব্যবসায় বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করে।

মোস্তফা কামাল বলেন, একপর্যায়ে ওই নেতা কয়েন কিনতে আগ্রহী হওয়ায় তার কাছ থেকে কয়েনের ইউনিট ক্রয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে রিপাের্ট সংগ্রহ, প্যাকিং প্রক্রিয়া, বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধির বিভিন্ন ব্যয় বহন, বিক্রয় মধ্যস্থতাকারী এজেন্টের পাওনা অগ্রীম প্রদানসহ বিভিন্ন কথা বলে ৯০ লাখ চার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। পরে নেতা বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরপর ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বনানী থানায় একটি মামলা করেন। পরে মামলাটি সিআইডি তদন্ত শুরু করে।

তিনি আরও জানান, রবিবার সিআইডি জানতে পারে প্রতারক চক্রটি আবারও ভিকটিম তালহাকে রাইস কয়েন বিক্রির প্রলোভন দেখাচ্ছে। খবর পেয়ে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াডের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেনের তত্ত্বাবধানে সিনিয়র এএসপি আবু সাইদের নেতৃত্বে একটি দল প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে বনানী থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০)