ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : এতিমশূন্য বন্ধ এতিমখানার নামে সরকারি বরাদ্দের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভেলাজান আনছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ্‌ বোর্ডিংয়ের পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে । আর ওই পরিচালনা কমিটি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।

জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় দুই শতাধিক এতিমখানায় ৯ হাজার এতিম রয়েছে। অথচ জেলায় সরকারি নিবন্ধন রয়েছে মাত্র ৮০টি এতিমখানার। এই ৮০টি এতিমখানায় ১ হাজার ৫২৬ জন এতিমের অর্থ চলমান রয়েছে। অনিবন্ধিত এতিমখানাগুলো পরিচালিত হচ্ছে রাস্তাঘাট, হাটবাজার ও স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায়।

সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মাহাপুর এলাকায় অর্ধশত এতিম ভিক্ষা করে খাবার জোগাড় করে পড়ালেখা করছে। অথচ চিলারং ইউনিয়নে ভেলাজান আনছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের বন্ধ এতিমখানার ১৫ এতিমের বরাদ্দ অর্থ ভাগ করে খাচ্ছে কমিটির সদস্যরা। ২০১৯ সালের জুন মাসের বরাদ্দের অর্থ তুলেছে পরিচালনা কমিটি। ডিসেম্বরের বরাদ্দ অল্প সময়ের মধ্যে হাতে পাবে তারা।

তবে পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দাবি, বরাদ্দ এলেও তারা আর তুলবেন না।

তথ্যানুসারে, ভেলাজান আনছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংটি ২০১৭ সাল থেকে বন্ধ। ২০১৮ সালের জুন মাসে এলাকাবাসী জানতে পারে যে, বন্ধ এতিমখানার নামে অর্থ তুলে আত্মসাৎ করছে পরিচালনা কমিটি। পরে তারা সমাজসেবা অফিসে বিষয়টি জানায়।

জেলা সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তারা জানান, ওই এতিমখানার নামে আর অর্থ বরাদ্দ হবে না। কিন্তু এখনও অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করেনি তারা। এতিমখানা পরিচালনা কমিটি কোন খুঁটির জোরে মানুষশূন্য বন্ধ এতিমখানার বরাদ্দ পাচ্ছে, তা জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

স্থানীয়রা জানায়, এখানে ৮-১০ জন এতিম ছিল। তারা খাবারসহ বিভিন্ন কষ্টে ২০১৭ সালের শেষের দিকে চলে গেছে। আমরা জানি তখন থেকে বরাদ্দ বন্ধ।

তবে দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে ভেলাজান আনছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ্‌ বোর্ডিংয়ের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জানান, গত জুন মাসে ১৫ জনের বরাদ্দ ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। তবে আগামীতে আর অর্থ বরাদ্দ এলেও উত্তোলন করা হবে না।

ঠাকুরগাঁও সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাইয়েদা সুলতানা বলেন, ভেলাজান আনছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ্‌ বোর্ডিংটি কি অবস্থায় আছে পরিদর্শন করে দ্রুত সময় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এফআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০)