নড়াইল প্রতিনিধি : সাংবাদিকদের মারধোর-লাঞ্ছিত করা, মেলায় লটারী জুয়ায় বাধা দেয়ায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতিকে মারধোর, ওজোপাডিকো নির্বাচনে অস্ত্র দিয়ে ব্যবলটবাক্স ছিনতাই, জমিজমা নিয়ে ছিনতাই ও অপহরণ, ভিক্টোরিয়া কলেজে মাদকের আখড়াবসানো সহ একাধিক কর্মকান্ডের  হোতা জেলা ছাত্রলীগের বিদায়ী সভাপতি আশরাফুজ্জামান মুকুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

অনেক নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে মাছিমদিয়ার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে বুধবার দুপুরে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন আশরাফুজ্জামান মুকুল নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৭ সালে ওজোপাডিকো কর্মচারী সমিতির নির্বাচনে পিস্তলের মুখে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেন। ২০১৭ সালের ২৪ মে মুকুলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ছবি তুলতে গিয়ে মারপিটের শিকার হন আরটিভি জেলা প্রতিনিধি মোস্তফা কামাল, তার ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলে সন্ত্রাসীরা। হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম তুহিনসহ অন্যরা।

২০১৭ সালের ২৩ আগষ্ট নড়াইল জামে মসজিদ এলাকায় একটি জমি দখল করতে না পেরে পুলিশের এক এস আই এর সহযোগিতায় জুবায়ের ও তার মাকে মাইক্রোবাসে করে অপহরন করে। নানা কায়দায় রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে মামলা থেকে মুক্ত হয়ে যান এই নেতা।

অপহরণের শিকার জুবায়ের বলেন, পারিপার্শিক নানা চাপে সে সময় আমরা ঘটনার মুল হোতাদের নামে মামলা করতে পারিনি।আমাদের এজাহারে মুকুলের নাম থাকলেও থানা থেকে সেই নাম বাদ দিয়ে মামলা নেয়া হয়।

সাংবাদিক মোস্তফা কামাল বলেন, সাংবাদিকের কাজের কোন স্বাধীনতা ছিলো না এই ছাত্রনেতার কাছে,তার নেতৃত্বেই আমার উপর হামলা করা হয়, আমার ক্যামেরা ভাংচুর করা হয়, ঘটনায় তার জড়িত থাকার বক্তব্য নিতে গেলে আমার বন্ধু সাংবাদিক তুহিনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে মারতে ছুেট যায়, সে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে প্রানে বাচে।

জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সূত্রে জানা গেছে,ছাত্রলীগ নেতা মুকুলের নেতৃত্বে কমরেড নজরুলের উপর হামলা চালানো হলেও অদৃশ্য কারনে মামলা থেকে নাম বাদ দেয়া হয়। পরে আদালতে সকল স্বাক্ষী হাজির হয়ে আশরাফুজ্জামান মুকুলের সংশ্লিষ্টতার কথ্ স্বীকার করেন,আদালত সেটা আমলে নিয়ে আসামী মুকুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে, দীর্ঘদিন ধরে আসামী পলাতক আছে এই অযুহাতে ছাত্রলীগের দ্বায়িত্বে থাকাকালীন তাকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।

জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এড.নজরুল ইসলাম জানান,বানিজ্য মেলার নামে জুয়া খেলায় বাধা সৃষ্টি করায় ছাত্রলীগের নেতা মুকুলের নেতৃত্বে আমার উপর হামলা চালায়। এ ঘটনার বিচার না হলে মানুষ সামাজিক অনাচারের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাবে না।

জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি চঞ্চল শাহরিয়ার মিম বলেন, ছাত্রলীগ কোন অন্যায়কারীর দায় নেবে না। সাবেক সভাপতি যদি সত্যিই কোন ঘটনার সাথে যুক্ত থাকেন তবে তা আইনগত ভাবেই সমাধান হোন এটাই ছাত্রলীগ চায়।

নড়াইল জেলা পুলিশ মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন পিপিএম বলেন, এড.নজরুল ইসলামকে পেটানোর মামলায় আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির পরে তাকে দীর্ঘদিন ধরে খুজছিলো পুলিশ। সন্ধান পেয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

(আরএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০)