গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া রাংসা নদীর ওপর পাকা সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ছয় গ্রামের বাসিন্দারা। নদী পারাপারে গ্রামবাসীর একমাত্র ভরসা আংশিক নির্মিত সেতুটির পিলারের উপর বাঁশের পাঠাতনের সাঁকোটি। কিন্তু সংস্কারের অভাবে সেই সাঁকোর পাঠাতন নড়বড়ে হয়ে যাওযায় যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয়রা জানায়, তারাকান্দা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে রাংসা নদী। নদী তীরবর্তী এলাকায় একটি মাদরাসা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এই দুটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আছে। কিন্তু নদীর ওপর পাকা সেতু না থাকায় গোয়ালকান্দি, হিরারপুর নারায়নপুর, নন্দীপুর, দর্জিগাতি ও বনপলাশিয়া সহ দুই পাড়ের ছয় গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুল-কলেজ-মাদরাসা শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীকে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে যাতায়াত করতে হয়। ২০০৩ সালে সরকারি অর্থায়নে গোয়ালকান্দি ও হিরারপুর গ্রামের সংযোগস্থলে নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ওই সময় নদীর সেতুর পিলার নির্মাণ করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সেতুর নির্মাণ কাজ থেমে যাওয়ায় রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পিলারের ওপর বাঁেশর পাঠাতন দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হয়।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে রাংসা নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি সংস্কারের অভাবে নড়বড়ে হয়ে গেছে। ভেঙে পড়ছে সেতুর পাঠতনে থাকা শুকনো বাঁশের অংশ। কিছু কিছু জায়গায় পাঠাতনের বাঁশ সড়ে গিয়ে ফাঁকা হয়ে গেছে। কিছু জায়গায় খোলে গেছে সেতুর পাঠাতনের বাধন। এই অবস্থায় চরম ঝুঁকি নিয়ে সাঁেকা পাড় হচ্ছে গ্রামবাসী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় রিকশা, ভ্যান, সাইকেল ও মোটরসাইকেল আরোহীরা সেতুর সামনে এসে নেমে হেঁটে গাড়ি নিয়ে সাবধানে সাঁকো পার হচ্ছে।

রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মদন চন্দ্র সিংহ রায় বলেন, তৎকালীন সময়ে এডিপি থেকে ব্রীজটি নির্মাণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অভাবে কাজ শেষ করা যায়নি। সেতুর অভাবে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা শিক্ষার্থী সহ গ্রামের বাসিন্দারা ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো হয়ে নদী পারাপার হয়। সাঁকোটি নড়বড়ে হওয়ায় মুমূর্ষ রোগী ও গর্ভবতী নারীদের জরুরী প্রয়োজনে হাসপাতালে নিতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অচিরেই এখানে পাকা সেতু নির্মাণ প্রয়োজন। স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী জনাব শরীফ আহাম্মদ প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানের জন্য এলজিইডিতে ডিও লেটার দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারাকান্দা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ শফিউল্লাহ বলেন রাংসা নদীর ওপর সেতুর নির্মাণের একটি প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০)